1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উহানফেরতরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

চীনের উহান থেকে যে ৩১২ জন বাংলাদেদিশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে তারা এখন বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় আছেন। তাদের অবজার্ভেশন পিরিয়ড প্রায় শেষ। এখন পর্যন্ত কারুর মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ দেখা যায়নি।

https://p.dw.com/p/3Xk4D
Bangladesch Rückkehrer aus Wuhan in Quarantäne
ছবি: Privat

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর জানান, ‘‘১৫ ফেব্রুয়ারি( শনিবার) তাদের অবজারভেশন পিরিয়ড শেষ হবে। ওই দিন বিকেলে বা পরের দিন( ১৬ ফেব্রুয়ারি, রবিবার) সকালে তারা বাড়ি যেতে পারবেন। তাদের কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নন। তাদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণও দেখা যায়নি। তারা সবাই সুস্থ।‘‘
তিনি আরো জানান, তাদের মধ্যে ৩০১ জন এখন আশকোনা হজক্যাম্পে আছেন, বাকি ১১ জন সিএমএইচ-এ আছেন।
এই ৩১২ জনের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী। তারা আশকোনা হজক্যাম্পে আছেন ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। ওইদিন সকালেই বিশেষ বিমানে করে চীনের উহান থেকে ঢাকায় আনা হয় তাদের। সেই হিসেবে এই ক্যাম্পে তারা ১৩ দিন কাটালেন। সর্বোচ্চ ১৪ দিনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
তাদের পাসপোর্ট জমা আছে কর্তৃপক্ষের কাছে। শনিবার বিকেলে ( ১৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হবে। ওইদিন তাদের সবার চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত যদি কারুর মধ্যে করোনার লক্ষন দেখা দেয় তাহলে তাদের এবং তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তারা ছাড়া পাবেন না।
ক্যাম্পে অববস্থানরত একজন শিক্ষার্থীর বাড়ি বগুড়ায়। তিনি জানান, ‘‘আমাদের ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে ছেড়ে দেয়ার কথা জানানো হয়েছে। ছাড়া পেলেই সরাসরি বাড়ি চলে যাব। এখন বাড়ির জন্য অস্থির হয়ে আছি। বাবা-মা ভাই-বোনকে দেখার জন্য মন কাঁদে। উহান থেকে হিসেব করলে আমরা একমাস ধরে বন্দী জীবন যাপন করছি। প্রথম কয়েকদিন আমরা সমস্যায় ছিলাম। এখানে যারা আমাদের দেখাশুনার দায়িত্বে আছেন তারা তখন কিছুটা আতঙ্কে ছিলেন। তবে এখন সে আতঙ্ক কেটে গেছে। চিকিৎসক এবং নার্সদের সেবায় আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আর খাবার দেয়া হয় পাঁচ বেলা।'‘
তিনি আরো জানান, ‘‘আমাদের বিনোদনের জন্য টিভি, ওয়াফাই, দাবা , লুডু, তাস , ক্যারমবোর্ড সবই দেয়া হয়েছে। একটা ফুটবলও শেষ পর্যন্ত যোগাড় হয়েছে। আমরা করিডোরে ফুটবল খেলি। আর সবাই মিলে যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল খেলা দেখেছি। বাংলাদেশের জয় উদযাপন করেছি। ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমরা করোনা অবসার্ভেশনে আছি।''
আরেকজন শিক্ষার্থী যার বাড়ি মানিকগঞ্জে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গণরুমে আছি। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের জন্য যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলে আমাদের ৩১২ জনের কেউই এখনো করোনায় আক্রান্ত হয়নি। শেষ পর্যন্ত হবেওনা বলে আশা করি। বড় একটা আশঙ্কা থেকে বেঁচে যাওয়ার এইযে আনন্দ বলে বোঝানো যাবে না।''
তারা জানান, কয়েকদিন ক্যাম্পের সামনে স্বজনেরা দেখা করতে আসলে পরে তারা আসেননি। তারা বুঝতে পেরেছেন দেখা করা সম্ভব না। তাদের উদ্বেগও এখন কমেছে।'‘
তবে আশকোনায় অবস্থারতরা মনে করেন বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর সামাজিক সমস্যা হতে পারে। সেজন্য তারা সবার সহেযোগিতা ও সাহনুভূতি আশা করছেন।
ডা. এ এস এম আলমগীর জানান, ‘‘আমরাও আশা করছি সবাই তাদের গ্রহণ করবেন। চীন ফেরত হলেই যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এই চিন্তা বাদ দেয়ার আহবান জানাচ্ছি।'‘
উহানে এখনো ১৭১ জন আটকে আছেন ।পাশের শহর ইচাংয়েও ১৭২ জন আটকে আছেন। তারা সবাই দেশে ফিরতে চান। কিন্তু সরকার প্রথমে তাদেরও ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করলেও ফ্লাইট পাওয়া না যাওয়ায় তাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছেনা।
২১ জানুয়ারি থেকে এপর্যন্ত চীন থেকে ফেরা এক লাখ ৩৩ হাজার ২০৬ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সন্দেহজনক এক জন। বাংলাদেশে এখনো কেউ করেনায় আক্রান্ত হননি।

ডা. এ এস এম আলমগীর

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য