হত্যার খতিয়ান
১৪ জানুয়ারি ২০১৩মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের ২০১২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের একটি ডিজিটাল কপি ডয়চে ভেলের কাছে এসেছে৷ প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ২৪ জনকে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তাঁদের গুম হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ গুম হওয়ার পর কারও কারও ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া গেছে৷' এছাড়া একইসময়ের মধ্যে ৭০জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন৷
বার্ষিক এই প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে অধিকার পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সারাদেশে আমাদের যে মানবাধিকার রক্ষকরা আছেন, তারা তথ্য পাঠিয়েছে৷ এরপর আমাদের তথ্য অনুসন্ধান দল সেসব তথ্য যাচাইবাছাই করার পর প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করেছে৷''
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী৷ এসময় তাঁর গাড়িচালক আনসারও সঙ্গে ছিলেন৷ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর দাবি, ‘সরকারের কোন বাহিনীই তাঁর স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছে৷' নাসিরউদ্দিন জানান, তাঁরা ইলিয়াস আলীসহ অন্যান্য গুমের ঘটনা অনুসন্ধান করছেন৷ তবে অনুসন্ধানের বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশ করতে আরো সময় লাগবে৷ তিনি ইলিয়াস আলীর পরিবারের অভিযোগের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘এটি খুবই স্পর্শকাতর বিষয় এবং এই বিষয়ে আমাদের তদন্ত এখনো চলছে৷'
অধিকার এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৬৯ জন নিহত এবং ১৭,১৬১ জন আহত হয়েছেন৷ এছাড়া গণপিটুনিতে মারা গেছেন ১৩২ ব্যক্তি৷ মূলত ‘ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থা ও পুলিশের প্রতি অনাস্থার কারণে' সাধারণ মানুষের নিজের হাতে আইন তুলে নেবার প্রবণতা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছে অধিকার৷ সংগঠনটির প্রতিবেদনে বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক' আখ্যা দেওয়া হয়েছে৷
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়েও তথ্য প্রকাশ করেছে অধিকার৷ তাদের হিসেবে, ২০১২ সালে বিএসএফ ৩৮ জন বাংলাদেশিকে হত্যা ও ১০০ জন বাংলাদেশিকে আহত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ উল্লিখিত সময়ে বিএসএফ কর্তৃক অপহৃত হন ৭৪ জন বাংলাদেশি৷ সীমান্তে নির্যাতন ও অপহরণ বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১২ সালে অনেক বেড়ে গেছে বলেও জানিয়েছে অধিকার৷