বিজ্ঞাপন ভাইরালে বাজিমাৎ
২৭ জুলাই ২০১৭বিজ্ঞাপনটিতে দেখা যায়, রাতে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এক দোকানের সামনে প্রতিদিন এক গৃহহীন ব্যক্তি এসে ঘুমায়৷ যিনি ভিক্ষা বা টোকাইয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন৷
এক সকালে দোকানদার দোকান খুলে দেখেন, ওই ব্যক্তি ঘুমিয়ে আছে৷ তিনি তার গায়ে বালতি-ভরা পানি ঢেলে দেন৷ ওই ব্যক্তি চিৎকার করতে থাকলে ছুঁড়ে মারেন ধাতব সেই বালতি৷ এতে পালিয়ে যান ওই ভিক্ষুক৷
পরের দিনও ঘুম থেকে জেগে একই পরিস্থিতি দেখে দোকানদার তাঁকে তাড়িয়ে দেন৷ এক সকালে দোকানদার জেগে দোকানের সামনে পেশাবের গন্ধ পান৷ তিনি ধরেই নেন এটা ওই গৃহহীন ব্যক্তির কাজ৷
ঘুমন্ত সেই গৃহহীনকে দোকানদার লাথি দেয়৷ এতে জেগে যান অনাহার-অপুষ্টি ক্লিষ্ট সেই ব্যক্তি৷ এভাবে আক্রমণে প্রথমে বিস্মিত হলেও দোকানির ক্রোধ দেখে পালিয়ে যান তিনি৷
ওইদিন গৃহহীন সেই ব্যক্তির সঙ্গে এ ধরনের আচরণে এক তরুণী এসে তিরস্কার করে যায় দোকানদারকে৷
এরপর এক সকালে দোকানদার ঘুম থেকে জেগে দেখেন, দোরগোড়ায় ঘুমানো সেই ব্যক্তি নেই৷ পরপর কয়েকদিন না দেখায় তিনি অবাক হন৷ এদিক ওদিক চলে যায় অনুসন্ধিৎসু চোখ৷
এ সময় পাশের দোকান থেকে একজন এই দোকানদারকে বলেন, তার (গৃহহীন) খোঁজ করছো? সে অনেক দূরে চলে গেছে৷ কিছুই বুঝতে পারলো না দোকানদার৷ তখন মনে পড়ে যায় দোকানের সামনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার কথা৷ পুরাতন ভিডিও ঘেটে তিনি দেখেন, অন্য এক ব্যক্তি পেশাব করতে শুরু করার পর ওই গৃহহীন তাকে তাড়িয়ে দেয়৷
এভাবে একদিন গৃহহীন এসে দেখতে পায়, হেলমেট পরা কিছু মানুষ দোকানের তালা ভাঙার চেষ্টা করছে৷ তিনি তা রুখে দাঁড়ান৷
কিন্তু দুর্বল শরীর নিয়ে এবং একাকী তাদের সাথে পেরে উঠেননি৷ এক পর্যায়ে ওরা তাঁর মাথা পদপিষ্ট করে৷ তাতেও তিনি দমে যাননি৷ এরপরও তাঁকে থামাতে না পেরে দুষ্কৃতিকারীরা তাঁর পেটে ছুরি চালিয়ে দেয়৷ এতে ঢলে পড়েন তিনি৷
এদিকে একের পর এক দিনের ভিডিও দেখছিলেন আর আত্মগ্লানিতে ভেঙে পড়ছিলেন দোকানদার৷ শেষে স্ক্রিনে ভেসে উঠে, দেয়ার ইজ মাচ মোর ট্রুথ দ্যাট ইউ আর ব্লাইন্ড টু৷
এরপরই ভিজার সিসিটিভির নাম, পণ্যের ছবি এবং মনোগ্রাম ভেসে উঠে৷ এটি ক্রিয়েচার ল্যাব সলিউশন লিমিটেড নামের এক কোম্পানির পণ্য৷
২০১৫ সালের ২৭ অগাস্ট ভিজারের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থেকে ভিডিওটি শেয়ার দেয়া হয়৷ এ পর্যন্ত এটা এক কোটি ৯২ লাখ বার দেখা হয়েছে৷ পরেরদিন এটা দেয়া হয় ফেইসবুকেও৷ যা এ পর্যন্ত ৬৫ লাখ বার দেখা হয়েছে৷ যা ২৭৮ হাজারবারেরও বেশি শেয়ার হয়েছে৷
এর মাধ্যমে নিজ দেশেও অপরিচিত এই ব্র্যান্ড পরিচিতি পেয়েছে বিশ্বজুড়ে৷
এসএন/ডিজি