1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘একদিন হাসিনাকেও হিজাব পরতে হবে'

৩১ জানুয়ারি ২০১৭

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য বই থেকে অমুসলিম এবং ভিন্ন ধারার লেখকদের লেখা বাদ দেয়ার বিষয়টি ফিরে ফিরে আসছে আলোচনায়৷ এক আলোচনা সভায় অধ্যাপক অজয় রায় বলেছেন, ‘‘সরকার এখনই ব্যবস্থা না নিলে একদিন শেখ হাসিনাকেও হিজাব পরতে হবে৷''

https://p.dw.com/p/2WhZu
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসার অজয় রায়
ছবি: bdnews24.com

পাঠ্যবইয়ে ‘সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় বৈষম্যমূলক' বিষয় অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে মঙ্গলবার প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়৷ হাইকোর্টের মাজার গেট সংলগ্ন রাস্তা ও সচিবালয়ের সামনে দফায় দফায় পুলিশের বাধার মুখে সংগঠনগুলো স্মারকলিপি দিয়ে কর্মসূচি শেষ করে৷ 

এর আগে গত রোববার  ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘সংকটের আবর্তে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর' শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ ‘সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন' আয়োজিত সেই সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বইয়ে ব্যাপক ভুল এবং অনাকাঙ্খিত পরিবর্তনের বিষয়গুলো উল্লেখ করে বলেন, ‘‘এবারের বইয়ে প্রথমত দেখলাম ভুল-ত্রুটিগুলো থেকে গেছে, তারপরে যেটা আমাদের নজরে আসল তাতে মনে হয়েছে রাতের অন্ধকারে সুনামি ঘটে গেছে৷ সেই সুনামি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের অসাম্প্রদায়িক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে৷''

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অজয় রায়ের আপত্তিটাও সেখানেই৷ তাই তিনি বলেন, ‘‘বইয়ে কোনো মুদ্রণজনিত ভুল হলে সেটা মেনে নেওয়া যেত৷ কিন্তু যখন সাম্প্রদায়িকীকরণ ঘটবে, তখন সেটাকে আমরা রেহাই দিতে পারি না৷ হেফাজতে ইসলামের নির্দেশমতো সমস্ত বই রচিত হবে আর সেটা এখন পর্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে শিশুরা পড়বে, এটা চলতে পারে না৷''

রাশেদা কে চৌধুরী পাঠ্যপুস্কককে ‘সাম্প্রদায়িক' করার বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এ পরিবর্তনগুলো কী করে ঘটল? এই যে ১৭টি লেখা বাদ দেওয়া হলো, তার মধ্যে ১৫ জন লেখক মূলধারার সম্প্রদায়ের না হওয়ায় বাদ দেওয়া হলো৷ এই আদর্শিক বিচ্যুতি কোনোভাবে গ্রহণ করা যায় না৷''

অজয় রায় মনে করেন, সরকারের মধ্যে অনেক হেফাজতের লোক বা হেফাজতপন্থি লোক আছে এবং তাদের কারণেই গোপনে পাঠ্যপুস্তকে এমন পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ তাই সরকারের প্রতি তাঁর আহ্বান, ‘‘আপনাদের মধ্যে যারা হেফাজতি আছে, তাদের চিহ্নিত করুন, শাস্তি বিধান করুন এবং জনসমক্ষে দাঁড় করান৷ নইলে বাংলাদেশকে আপনারা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না৷''

এখনো ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে মৌলবাদীদের হাতেই দেশ চলে যেতে পারে – এমন ইঙ্গিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে অজয় রায় বলেন, ‘‘একদিন…বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, আপনাকেও বোরকা পরতে হবে, আপনাকেও হিজাব পরতে হবে৷ এই হেফাজতিরা আপনাকেও ছাড়বে না৷ বঙ্গবন্ধুকন্যা বলে রেহাই দেবে না৷'' 

অজয় রায়ের বক্তব্য সমর্থন করে অনেকেই খবরটি শেয়ার করেছেন৷ সাংবাদিক গাজী নাসিরুদ্দিন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘অজয় রায় স্যারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত৷'' 

প্রবীর বিধান লিখেছেন, ‘‘শেখ হাসিনা প্রয়োজনে বোরকা পরবেন, কিন্তু খালেদা রাজি হবেন না৷'' 

প্রসঙ্গত, অজয় রায়ের ছেলে অভিজিৎ রায় ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে খুন হন৷ হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন৷ কিন্তু দু'বছর পেরিয়ে গেলেও বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ হত্যার বিচার হয়নি৷ এক সাক্ষাৎকারে অজয় রায় বলেছেন, ‘‘পুলিশের কাছে গেলেই বলে, খুনি শনাক্ত হয়েছে, পুলিশের নজরদারিতে আছে৷ শিগগির খুনিকে গ্রেফতার করা হবে৷ আমি পুলিশের ‘খুনি নজরদারিতে' এই কথার অর্থ বুঝি না৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘ছেলে হত্যার বিচার পাবো বলে আর বিশ্বাস করি না৷ পুলিশ আমাদের কোনো কিছু জানায় না, খোঁজও নেয় না৷ তিন মাস আগে পুলিশের কাছে গিয়েছিলাম, কোনো তদন্ত নেই৷ শুধু বলে তদন্ত চলছে৷''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

বন্ধু, আজয় রায়ের এই মন্তব্য সম্পর্কে আপনি কিছু বলচে টাইলে লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান