1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এনকে’কে বিদায় জানাল জার্মানি

১৫ নভেম্বর ২০০৯

গত মঙ্গলবার হানোফার শহরের কাছে এক ট্রেনের সামনে পড়ে মাত্র ৩২ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন জার্মানির জাতীয় ফুটবল দলের গোলকিপার রোব্যার্ট এনকে৷

https://p.dw.com/p/KXYn
প্রিয়জনদের কাছ থেকে শেষ বিদায়ছবি: AP

নিজের শিশুকন্যার মৃত্যু সহ একাধিক কারণে এনকে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, যার সঠিক মাত্রা জানা গেল তাঁর অকালমৃত্যুর পর৷ শোকে বিহ্বল গোটা জার্মান জাতি রবিবার এনকে’কে বিদায় জানাল৷

মর্মস্পর্শী বিদায়

রবিবার হানোফারের এক ফুটবল স্টেডিয়ামে প্রায় ৪০,০০০ মানুষ জার্মানির জাতীয় ফুটবল দলের সদ্য প্রয়াত গোলকিপার রোব্যার্ট এনকে’কে বিদায় জানালেন৷ ঠিক এক সপ্তাহ আগে ঐ মাঠেই একটি ম্যাচে নিজের ক্লাবের ক্যাপ্টেন হিসেবে শেষ বারের মত খেলেন এনকে৷ জার্মানির প্রথম চ্যান্সেলর কনরাড আডেনাউয়ারের অন্ত্যেষ্টি অনুষ্ঠানের পর গোটা দেশে এত বড় আকারের শোকসভা অনুষ্ঠিত হয় নি৷ শুধু খেলোয়াড় হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেও এনকে’র গুণমুগ্ধ ছিলেন অনেকেই৷ এনকে’র ক্লাব ‘হানোফার ৯৬’র সভাপতি মার্টিন কিন্ড’এর কণ্ঠে ধরা পড়ল সেই আবেগ৷ তিনি বললেন, ‘‘হানোফার ৯৬ ক্লাবের ক্যাপ্টেন হিসেবেই হোক, আর জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবেই হোক, সব জায়গায়ই রোব্যার্ট এনকে’র শুধু বন্ধুই ছিল৷ তাঁর স্বাভাবিক আচরণ, তাঁর বিনয় ও তাঁর আন্তরিকতার জন্যই এমনটা হয়েছিল৷ রোব্যার্ট, তুমি প্রকৃত অর্থেই সব ক্ষেত্রে এক নম্বর ছিলে৷’’

Flash-Galerie Robert Enke Trauerfeier
রবিবার প্রায় ৪০,০০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন হানোফারের স্টেডিয়ামেছবি: AP

মাঠের ঠিক মাঝখানে কফিনের মধ্যে রাখা ছিল এনকে’র মরদেহ৷ চারিদিকে সাদা ফুলের স্তবক ও গুচ্ছ৷ ক্যাপ্টেন মিশায়েল বালাক’এর নেতৃত্বে জাতীয় ফুটবল দলের সদস্যরা কফিনের সামনে পুষ্পস্তবক রাখেন৷ এনকে’র বিধবা স্ত্রী টেরেসা কফিনের সামনে এসে দাঁড়ান৷ গোটা স্টেডিয়ামে উপস্থিত মানুষ আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে প্রয়াত খেলোয়াড়ের আত্মার প্রতি সম্মান জানান৷ বুন্ডেসলিগা’র সব ক্লাবের প্রতিনিধি এদিন স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন৷ অনেকেই নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না৷

Flash-Galerie Gedenkgottesdienst für Nationaltorwart Enke
বুধবার গির্জার শোকসভায় শোকে মুহ্যমান জাতীয় দলের সতীর্থরা – ম্যানেজার অলিভার বিয়ারহফ, কোচ ইয়োআখিম ল্যোভ, ক্যাপ্টেন মিশায়েল বালাকছবি: picture-alliance/ dpa

এনকে’র মৃত্যু থেকে শিক্ষা

জার্মানির ফুটবল জগতের প্রায় সব বিশিষ্ট প্রতিনিধিই উপস্থিত ছিলেন রবিবার৷ জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি টেও সোয়ানসিগার তাঁর ভাষণে বলেন, ‘‘ফুটবল সবকিছু হতে পারে না৷ প্রিয় বাবা-মায়েরা, আপনারা যখন নিজেদের সন্তান কখনো জাতীয় দলে স্থান পাবে বলে স্বপ্ন দেখেন, তখন শুধু বাইরের চাকচিক্য ও সংবাদ মাধ্যমে যে ছবি ফুটে ওঠে, শুধু সেটাই দেখবেন না৷ মানুষের মনের মধ্যে যে সংশয় ও দুর্বলতা রয়েছে, সেবিষয়টিও ভেবে দেখুন৷’’

রাজনীতি, খেলাধুলার জগত সহ সমাজের প্রায় সব অংশের প্রতিনিধিই স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন৷ ছিলেন জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমাজিয়ের, প্রাক্তন চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ, ফুটবল সম্রাট ফ্রানৎস বেকেনবাউয়ার সহ অনেকেই৷ বর্তমান যুগে খেলোয়াড়দের উপর দ্রুত সাফল্যের জন্য যে মারাত্মক চাপ দেখা যায়, সেবিষয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তার ডাক শোনা গেল অনেকেরই কণ্ঠে৷

অন্ত্যেষ্টি অনুষ্ঠান খোলা স্টেডিয়ামে হলেও পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী এক সংক্ষিপ্ত পারিবারিক অনুষ্ঠানে এনকে’র মরদেহ দাফন করা হয়৷ সেখানে বহিরাগতদের উপস্থিতি অনাকাঙ্খিত ছিল৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন. সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই