এবার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে চলেছেন ট্রাম্প?
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর গড়ার জন্য অর্থ সংগ্রহে বদ্ধপরিকর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ তাই মার্কিন কংগ্রেস ৫৭০ কোটি ডলার বরাদ্দ না করায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিপর্যয়সহ একাধিক তহবিল থেকে সেই অর্থ সংগ্রহের পথ বেছে নিয়েছেন তিনি৷ কংগ্রেস এই অঙ্কের মাত্র এক চতুর্থাংশ বরাদ্দ করায় অন্য সূত্র থেকে বাকি অর্থ পেতে চাইছেন ট্রাম্প৷ হোয়াইট হাউসের সূত্র অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে মূলত বিভিন্ন প্রতিরক্ষা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ তহবিল থেকে প্রায় ৬৬০ কোটি ডলার সংগ্রহ করতে পারেন৷
বিতর্কিত এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে৷ এবার অ্যামেরিকার ১৬টি রাজ্য আদালতে সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করলো৷ সোমবার ‘প্রেসিডেন্ট দিবস'-এর দিনটিকেই মামলার জন্য বেছে নেওয়ায় বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ রাজ্য সরকারগুলির অভিযোগ, ট্রাম্প সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন এবং তিনি নিজেই এই সাংবিধানিক সংকটের জন্য দায়ী৷ তাছাড়া সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশকে জাতীয় স্তরে জরুরি অবস্থা হিসেবে তুলে ধরার ব্যাখ্যাকেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে৷ উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের নিজস্ব তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে অনুপ্রবেশের হার গত ৪৫ বছরে সবচেয়ে কম মাত্রা ছুঁয়েছে৷ সন্ত্রাসবাদীরা দক্ষিণের স্থলসীমান্ত পেরিয়ে দেশে প্রবেশ করছে, এমন কোনো তথ্যও সরকার দিতে পারে নি৷
শেষ পর্যন্ত বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় স্তরে ক্ষমতা বণ্টনের প্রশ্নে সর্বোচ্চ আদালত জোরালো অবস্থান নিতে পারে৷ তখন পরিকল্পিত সরকারি ব্যয় অনুমোদনের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতেই রাখার রায় দিলে প্রেসিডেন্ট এমন বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না৷
রবিবারই ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল৷ ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল সেভিয়ার বেসেরা এ দিন বলেন, ফেডারেল সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে ক্যালিফোর্নিয়াসহ একাধিক রাজ্যের মানুষ সামরিক প্রকল্প, বিপর্যয়ের সময়ের জন্য বরাদ্দ অর্থ ও অন্যান্য তহবিল থেকে বঞ্চিত হতে পারে৷ বেসেরা বলেন, ট্রাম্প নিজে স্বীকার করেছেন যে জরুরি অবস্থা ঘোষণার কোনো কারণ নেই৷
রিপাবলিকান দলের মধ্যেও ট্রাম্প বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন৷ সমালোচকদের আশঙ্কা, এমন দৃষ্টান্তকে সম্বল করে ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্টরাও নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে কংগ্রেসকে উপেক্ষা করে জাতীয় স্তরে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন৷
সীমান্তে প্রাচীর গড়ার পরিকল্পনার বিরোধিতা করে একাধিক আইনি পদক্ষেপের খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ প্রস্তাবিত প্রাচীর গড়া হলে জমি হারানোর আশঙ্কায় মামলা করেছেন টেক্সাস রাজ্যের ৩ ব্যক্তি৷ এক পরিবেশ সংগঠনও শুক্রবার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ এনেছে৷
এসবি/জেডএইচ (এএফপি, রয়টার্স)