এবার জার্মানির স্থলসীমান্তে কড়া নিয়ন্ত্রণ
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে জার্মানির জোট সরকার যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে না- এমন অভিযোগ বেশ কিছুকাল ধরে শোনা যাচ্ছে৷ চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সেই লক্ষ্যেকড়া পদক্ষেপের ঘোষণা করলেও নিন্দুকদের মতে, বাস্তবে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না৷ সরকার অবশ্য পরিসংখ্যান দেখিয়ে দাবি করছে যে, চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই অভিবাসন ২১ শতাংশের বেশি কমে গেছে৷
কিন্তু জোলিঙেন শহরে অবৈধ আশ্রয়প্রার্থীর ছুরি চালানোর ঘটনা এবং তার ঠিক পর পূবের দুই রাজ্যে চরম দক্ষিণপন্থি এএফ়ডি দলের অভাবনীয় সাফল্যের পর শলৎসের সরকার একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ প্রথমে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত একদল অবৈধ শরণার্থীকে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ এবার জার্মানির সব স্থলসীমান্তে আরো কড়া নিয়ন্ত্রণ চালু করার ঘোষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার৷
সোমবার জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে আপাতত ছয় মাসের জন্য জার্মানির স্থলসীমান্তে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷ মুক্ত সীমানার শেঙেন এলাকার সদস্য হওয়া সত্ত্বেও জার্মানি এমন পদক্ষেপ নেবে৷ ফেসার বলেন, বিশেষ এক উদ্যোগের আওতায় কর্তৃপক্ষ সরাসরি সীমান্তেই আরো বেশি শরণার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা পাবে৷ তবে সেই উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত জানানি৷ ফেজার বলেন, ইউরোপীয় কমিশন এবং প্রতিবেশী দেশগুলিকে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানানো হয়েছে৷ এই উদ্যোগের মাধ্যমে উগ্র ইসলামপন্থি সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং সীমান্তে অপরাধমূলক সংগঠনগুলিকেও দমন করতে চায় সরকার৷
অবৈধ অনুপ্রেবেশের প্রশ্নে কোণঠাসা শলৎসের সরকার চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল ও নতুন বাম-রক্ষণশীল বিএসডাব্লিউ দলের সাফল্যের মুখে সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা কমাতে বাড়তি তৎপরতা দেখাচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের জনপ্রিয়তাও সরকারের মাথাব্যথার কারণ৷ সরকারি জোটের শরিক দলগুলি দুই সপ্তাহ পর পূবের ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে নির্বাচনে অবৈধ অভিবাসনে রাশ টানতে নতুন সব পদক্ষেপের সুফল পায় কিনা, সে বিষয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে৷ উল্লেখ্য, আগামী বছর জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা৷
অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে জার্মানির একক পদক্ষেপ ইউরোপীয় স্তরে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ বিশেষ করে মুক্ত সীমানার শেঙেন এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য নিয়ন্ত্রণ চালু রাখা কঠিন হতে পারে৷ একমাত্র অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার উপর হুমকি দেখা দিলে শেঙেন এলাকার দেশগুলি চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে সীমান্তে সাময়িক নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেয়ারহার্ড কামের জার্মানির ‘বিল্ড' সংবাদপত্রকে সোমবার জানিয়েছেন যে, তাঁর দেশ জার্মান সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানো কোনো শরণার্থীকে গ্রহণ করবে না৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)