এবারের জলবায়ু সম্মেলনের প্রধান খেলোয়াড় যারা
গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে নিজ নিজ দাবি দাওয়া নিয়ে হাজির হচ্ছে ১৯৭ টি দেশ৷ কপ২৬-এ উন্নত, উন্নয়নশীল আর স্বল্পোন্নত দেশগুলোর, কার কী এজেন্ডা থাকছে জানুন ছবিঘরে৷
চীন
বৈশ্বিক জলবায়ু লক্ষ্য অর্জন কতটা সম্ভব তা অনেকাংশে নির্ভর করে বিশ্বের সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী এই দেশের কর্মকাণ্ডের উপরে৷ ২০৬০ সাল নাগাদ কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের ঘোষণা দেন শি জিনপিং, যা বিজ্ঞানীদের বেঁধে দেয়া লক্ষ্যের চেয়ে ১০ বছর পিছিয়ে৷ ২০২৬ সালের মধ্যে কয়লার ব্যবহার বন্ধের ঘোষণাও এসেছে৷ এবারের সম্মেলনে সহ পরিবেশমন্ত্রীকে পাঠাচ্ছে চীন, যা বড় ধরনের কোনো ঘোষণার পথে বড় বাধা বলে মনে করছেন অনেকে৷
যুক্তরাষ্ট্র
কার্বন নিঃসরণে চীনের পরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান৷ ট্রাম্পের বিদায়ের পর চলতি বছর আবারও জলবায়ু আলোচনায় ফিরেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ প্যারিস চুক্তিতে ফেরার পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বণ নিঃসরণ ২০০৫ সালের তুলনায় ৫০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেন বাইডেন৷ কিন্তু এ সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নীতির অভাব গ্লাসগো সম্মেলনে চীন, ভারত ও ব্রাজিলের মতো দেশগুলোকে চাপে রাখার ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে মনে করছেন কূটনৈতিক ও এনজিওকর্মীরা৷
যুক্তরাজ্য
এবারের সম্মেলন নিয়ে ভীষণ আশাবাদী আয়োজক দেশটি৷ এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে কয়লাকে ইতিহাসের পাতায় নিয়ে যাবেন বলে উল্লেখ করেছেন সম্মেলনের নেতা ব্রিটিশ মন্ত্রী অলোক শর্মা৷ ২০৫০ সালের মধ্যে নিট কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি আছে যুক্তরাজ্যের৷ উত্তর সাগরে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান বন্ধে চাপ আছে বরিস জনসন সরকারের উপরে৷ সেক্ষেত্রে দেশটিকে সামনের দিনে আমদানিকৃত জ্বালানির উপর নির্ভরশীল হতে হবে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন
বিশ্বের আট ভাগ গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের দায় এই জোটের ২৭ দেশের৷ তবে গত কয়েক বছর ধরেই তাদের নিঃসরণের মাত্রা পড়তির দিকে৷ ১৯৯০ সালের পর্যায়ের চেয়ে ২০৩০ সাল নাগাদ নিট নিঃসরণ অন্তত ৫৫ শতাংশে আর ২০৫০ সালে শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য তাদের৷ গত দুই বছর ধরেই তাপদাহ আর বন্যার মতো বৈরি জলবায়ুর মুখোমুখি হচ্ছে তারা৷
স্বল্পোন্নত দেশ
৪৬টি দেশ, ১০০ কোটি নাগরিক আছে এই দলে৷ তারা ছড়িয়ে আছে আফ্রিকা, এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে৷ উন্নত দেশগুলোর মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ভুক্তভোগী মূলত বাংলাদেশসহ এই দেশগুলোই৷ আফ্রিকান গ্রুপ অব ন্যাশনস, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সাথে মিলে এলডিসি দেশগুলোর লক্ষ্য থাকবে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে উন্নত দেশগুলোর বছরে ১০০ কোটি ডলারের জলবায়ু তহবিলের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় চাপ দেয়া৷
‘ব্যাসিক’ দেশসমূহ
ব্রাজিল, সাউথ আফ্রিকা, ভারত এবং চীন উন্নয়নশীল এই অর্থনীতিগুলো এখন উচ্চ দূষণকারী দেশে পরিণত হয়েছে৷ তারা জলবায়ু তহবিলে ধনীদের আরো বেশি বেশি অর্থ প্রদানে চাপ দিয়ে আসছে৷ নতুন দিল্লি মনে করে উন্নত দেশগুলোর বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়াও যথেষ্ট নয়৷ এই তহবিল ৭৫০ বিলিয়নে নেয়ার দাবি সাউথ আফ্রিকার৷ অ্যামাজনের বন ধ্বংসের বিপরীতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ চায় ব্রাজিলও৷