এভারেস্টে আবর্জনার স্তূপ
২৩ মার্চ ২০১৪আজ থেকে ৬০ বছর আগে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন এডমান্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে৷ এরপর এখন পর্যন্ত অন্তত তিন হাজার পর্বতারোহী এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেছেন৷ এছাড়া ৮,৮৪৮ মিটারের এই পর্বতে প্রতি বছর আরোহণ করেন হাজারো মানুষ৷ তবে এঁদের প্রত্যেকেই যে পর্বত আরোহণের জন্য প্রশিক্ষিত, তা নয়৷ অনেকের দুঃসাহসিক অভিযান বা রোমাঞ্চের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি৷ ফলে প্রশিক্ষণ না থাকায় তাঁরা এভারেস্টের পরিবেশ দূষিত করছেন, রেখে আসছেন নানা আবর্জনা৷
এ সব আবর্জনার মধ্যে রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার, মনুষ্য বর্জ্য, এমনকি মৃত পর্বত আরোহীদের শরীরও, যা পরিবেশ দূষণের ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে৷ গত ছয় দশকে অন্তত ৫০ টন আবর্জনা জমেছে সেখানে৷ এ জন্য এভারেস্টকে বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ‘ডাস্টবিন'৷ মাউন্ট এভারেস্টের পরিবেশ বাঁচাতে নেপাল কর্তৃপক্ষকে কম সংখ্যক পর্বতারোহীকে আরোহণের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিখ্যাত পর্বতারোহী রিনহোল্ড মেসনার৷
সম্প্রতি নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয় একটি আইন করেছে৷ আইন অনুযায়ী এভারেস্ট আরোহীদের প্রত্যেককে নামার সময় ফিরতে হবে আট কিলোগ্রাম আবর্জনা নিয়ে৷ আগামী এপ্রিল মাস থেকে এ আইন কার্যকর হবে৷ আরোহীকে প্রতিটি বেজ ক্যাম্পে কর্তৃপক্ষের কাছে ঐ আবর্জনা হস্তান্তর করতে হবে৷ তাদের এই আইনের লক্ষ্য হলো যাতে নতুন কোনো আবর্জনা এভারেস্টে জমা না হয়৷
নেপাল ন্যাশনাল গাইড অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব পাসাং শেরপা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, নতুন এই আইন খুব ভালো৷ কিন্তু এটা আসলে কীভাবে বাস্তবায়ন হবে সেটা নিয়ে তিনি চিন্তিত৷ কেননা আরোহন শুরুর ঠিক কতদিন পর কোন বেজ ক্যাম্পে আবর্জনা জমা দিতে হবে, তার সঠিক নির্দেশনা নেই৷ আর পর্বত শিখরে পৌঁছাতে অনেকগুলো বেজ ক্যাম্প পথে পড়ে৷
এদিকে, পর্যটন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাঁরা আবর্জনা ফিরিয়ে আনবে না তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে তারা৷ তবে কী ধরনের শাস্তি তাঁদের প্রাপ্য তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি৷ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন থেকে পর্বতারোহীদের ৪,০০০ ডলার জমা দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে৷ তবে আবর্জনা নিয়ে এলে তাঁরা সেই অর্থ ফেরত পাবেন৷