এভারেস্ট জয়
২২ মে ২০১২এভারেস্টের সঙ্গে বাংলাদেশিদের সখ্যতা খুব বেশি দিনের নয়৷ ২০১০ সালের ২৩'মে এভারেস্ট জয় করেন মুসা ইব্রাহিম৷ তিনিই হচ্ছেন প্রথম বাংলাদেশি, যিনি কিনা এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশি পতাকা উড়ালেন৷ ঠিক এক বছর পর, ২০১১ সালের মে মাসে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের চূড়া জয় করেন এম এ মুহিত৷
মুহিত এবছর আবারো এভারেস্ট জয় করেছেন৷ পৃথিবীর সর্বোচ্চ এই পর্বত তিনি ডিঙ্গিয়েছেন উত্তর (তিব্বত অংশ) এবং দক্ষিণ (নেপাল অংশ) দুই দিক দিয়েই৷ এটাও বাংলাদেশিদের জন্য এক রেকর্ড৷ তবে এবার মুহিত'এর সঙ্গী নিশাত মজুমদার৷ বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট জয়ী নারী নিশাত৷ এভারেস্ট বেস ক্যাম্প থেকে ডয়চে ভেলেকে নিশাত বলেন, ‘‘এরকম একটা কাজ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে৷ পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হচ্ছে এভারেস্ট৷ এই শৃঙ্গে আরোহণ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে''৷
নিশাত জানান, বাংলাদেশের মেয়েরা এখনো অনেক কাজ করতে চান না৷ কিছুক্ষেত্রে তারা মনে করেন, এটা আসলে তাদের কাজ নয়৷ কিন্তু আমার এভারেস্ট জয়ের পর মেয়েদের এই চিন্তা হয়ত বদলে যাবে৷ মেয়েরাও যে সব কাজ করতে পারে, সেটা এখন প্রমাণিত৷ তিনি বলেন, ‘‘পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে এভারেস্ট শৃঙ্গে আরোহণ করা৷ এই কাজটা যদি একটি মেয়ে করতে পারে, তাহলে আমরা মেয়েরা মনে হয় সব কাজই করতে পারবো''৷
ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় বেস ক্যাম্পে বিশ্রাম গ্রহণ করছিলেন নিশাত৷ ভূমি থেকে এই ক্যাম্পের উচ্চতা সাড়ে সতের হাজার ফুট৷ মঙ্গলবার সেখানে অবস্থান করছেন মুহিতও৷ দ্বিতীয়বার এভারেস্ট জয়ী এই পর্বতারোহী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নেপালের দিক থেকে এভারেস্ট জয় তিব্বতের দিকের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন, অন্তত ২০ গুন কঠিন৷ আমরা এই প্রথম আভালঞ্চে (তুষারধস) পড়েছিলাম৷ তবে আমরা অলৌকিকভাবে দেশবাসীর দোয়ায় বেঁচে যাই৷ আমাদের কোনকিছু হয়নি, অক্ষতভাবে বেঁচে গেছি৷''
বলাবাহুল্য, এবছর এভারেস্টের আবহাওয়া মোটেই পর্বতারোহীদের অনুকূলে নেই৷ নিশাত এবং মুহিত সফলভাবে ১৯ মে চূড়ায় আরোহণ করে ফিরে আসলেও এই সময়ে কয়েক পর্বতারোহী মারা গেছেন৷ মুহিত এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমি যতদূর জানি, নেপালের দিক থেকে প্রায় ১২-১৩ জন মারা গিয়েছেন৷ এবং সামিটের পর ৫-৬ জন মারা গিয়েছেন, কারণ শরীরে তখন আর কিছু থাকে না৷''
উল্লেখ্য, নিশাত মজুমদার এবং এম এ মুহিতকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সারা দেশের মানুষ৷ মূলধারার গণমাধ্যম ছাড়াও ফেসবুক এবং ব্লগে এই বিষয়ে অসংখ্য নিবন্ধ প্রকাশ হয়েছে৷ এই দুই পর্বতারোহী বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাব (বিএমটিসি)'র সদস্য৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন