1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এমন নেতা যদি সবাই পেত!

৩১ জুলাই ২০১৭

জার্মানির আসন্ন নির্বাচনে ভোটারদের অপেক্ষাকৃত সহজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ অ্যামেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মতো চরম বিভাজনমূলক নির্বাচনি প্রচারের বিষাক্ত পরিবেশ দেখা যাচ্ছে না জার্মানিতে৷

https://p.dw.com/p/2hRgd
Pegida-Kundgebung in Dresden
ছবি: picture alliance/dpa/S. Kahnert

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন ও ব্রেক্সিটের পর পপুলিস্টদের উত্থানের তেমন কোনো অঘটন ঘটেনি বটে, কিন্তু নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের মতো দেশের নির্বাচনে তেমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল৷ পপুলিস্ট নেতারা ক্ষমতাকেন্দ্রের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলেন৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁরা সেই সাফল্যের মুখ দেখতে পারেননি৷ ইউরোপ হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে৷

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত ও ইউরোপে পপুলিস্ট নেতাদের প্রতি এমন সমর্থনের কারণ কী? অ্যামেরিকায় যাঁরা এক সময়ে বারাক ওবামার সমর্থন ছিলেন, তাঁরাই আবার ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেন কী করে! বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, যে মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির উপর বহু বছর ধরে জমে থাকা ক্ষোভ উগরে দিতে ভোটররা ট্রাম্প বা ব্রেক্সিটের মতো বিকল্প বেছে নিয়েছেন৷ এমনকী এই সিদ্ধান্তের পরিণতি জেনেও কেউ কেউ এ কাজ করেছেন৷

Infografik Moderater Populismus in Deutschland ENG

জার্মানিতেও এমন ‘প্রতিবাদী' কণ্ঠের কিছু দৃষ্টান্ত দেখা গেলেও এখনো পর্যন্ত প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলিই সংখ্যাগুরু ভোটারদের সমর্থন পেয়ে এসেছে৷ এই সব ছোটবড় দল দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো ও সংবিধানের প্রতি দ্বিধাহীন আনুগত্য দেখিয়ে চলেছে৷ দক্ষিণ থেকে বামপন্থি – দায়িত্বশীল সব মহলই নিজেদের এই কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ রেখেছে৷ এমনকি চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের বিতর্কিত শরণার্থী  নীতির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড়ও সেই গণ্ডি অতিক্রম করেনি৷ যে সব দল সেই লক্ষণরেখার বাইরে সহজ সমাধানসূত্র বাতলে দিচ্ছে, তাদের প্রতি জনসমর্থন যথেষ্ট সীমিত৷

ফলে ২০১৭ সালে জার্মানির সাধারণ নির্বাচনের পরিবেশ ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় একেবারেই ভিন্ন৷ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সার্বিক স্থিতিশীলতার মধ্যে জার্মান ভোটারদের মনে এমন কোনো ক্ষোভের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, যার ফলে মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির এই মুহূর্তে দুশ্চিন্তা বয়ে আনতে পারে৷

প্রার্থী হিসেবে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী এপিডি দলের মার্টিন শুলৎস কিন্তু নিশ্চিন্ত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত বিষয়গুলি এএফডি বা ‘জার্মানির জন্য বিকল্প' দলের হাতে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত নন৷ শরণার্থীদের আগমন ও সমাজে বিদেশিদের আরও ভালভাবে সম্পৃক্ত করার প্রশ্নে তাঁরা নিজেদের অবস্থানের প্রতি সমর্থন আদায় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ নেতা হিসেবে এতকাল ধরে ম্যার্কেল দেশে-বিদেশে যে বিপুল আস্থা অর্জন করেছেন, সেটা তাঁর বিশাল মূলধন৷ অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাঠামোর মধ্যে দীর্ঘকাল সক্রিয় থেকে মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন শুলৎস৷ সামাজিক গণতন্ত্রী আদর্শের প্রতি অনুগত থেকে তিনি সহজ ভাষায় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন৷ দুই নেতার কেউই বিদেশি-বিদ্বেষ, গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর আঘাত, ইউরোপ-বিরোধিতার মতো বৈরি মনোভাব বরদাস্ত করতে পারেন না৷ এমনকি শুলৎস প্রার্থী হবার আগে দু'জনের মধ্যে বিরোধিতার বিষয় খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল৷

এমন প্রেক্ষাপটে জার্মানির ভোটারদের সৌভাগ্য যে, তাঁদের ট্রাম্প অথবা মারিন ল্য পেন-এর মতো প্রার্থীকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিতে হচ্ছে না৷

বন্ধু, লেখকের সঙ্গে আপনি কি একমত? জানান নীচের ঘরে৷