এলএনজি: ইউরোপের কারণে সমস্যায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান
১২ অক্টোবর ২০২২এলএনজির চাহিদা বাড়লেও এলএনজি রপ্তানির ক্ষমতা বাড়েনি৷ তাই দাম অনেক বেড়ে গেছে৷
ডয়চে ভেলেকে দেয়া অ্যানালিটিক্স গ্রুপ ‘ইনডিপেন্ডেন্ট কমোডিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেস' আইসিআইএস-এর তথ্য বলছে, গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে ইউরোপের দেশগুলোতে এলএনজির চাহিদা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে৷ ফ্রান্সে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চাহিদা বেড়েছে ৮৮ শতাংশ৷ নেদারল্যান্ডসে ১০৯ শতাংশ ও বেলজিয়ামে ১৫৭ শতাংশ বেড়েছে৷
অন্যদিকে বাংলাদেশে চাহিদা ১০ শতাংশ ও পাকিস্তানে ১৯ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে আইসিআইএস৷
জ্বালানি বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ব়্যাপিড্যান এর এলএনজি বিশ্লেষক অ্যালেক্স মান্টন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ইউরোপের দেশগুলো অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে এলএনজি কিনছে৷''
বাংলাদেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মদ তামিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যত গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে তার পুরোটা সংগ্রহের চেষ্টা করছে ইউরোপ৷ তাদের ক্রমক্ষমতা উন্নয়নশীল দেশগুলোর চেয়ে অনেক বেশি৷ তাই বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের মতো দেশগুলো বড় সমস্যায় পড়ছে৷''
কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশ পর্যাপ্ত গ্যাস সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছে৷
পাকিস্তানও সংকটে পড়েছে৷ সম্প্রতি চার থেকে ছয় বছরের জন্য প্রতিমাসে এক কার্গো এলএনজি কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করেছিল দেশটি৷ কিন্তু কোনো আবেদন পড়েনি৷ কয়েক মাস ধরে স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছে পাকিস্তান৷
পাকিস্তানের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের করা চুক্তিতে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে৷ যেমন কোনো কোম্পানি চাইলে চুক্তি ভেঙে পাকিস্তানের কাছে এলএনজি না বিক্রি করে অন্যদের কাছে বিক্রি করতে পারে৷ সেক্ষেত্রে অবশ্য পাকিস্তানকে জরিমানা দিতে হবে৷ তবে এলএনজির দাম এত বেড়ে গেছে যে ঐ দামে বিক্রি করে যে লাভ হয় তা থেকে জরিমানার টাকা দেয়ার পরও ভাল লাভ থাকে৷
পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়া বাংলাদেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়ছে৷ সাম্প্রতিক সময়ে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কয়েকবার কমানো হয়েছে৷ ‘‘মূলত জ্বালানি সংকটের কারণে এমন হচ্ছে,'' বলছেন মোহাম্মদ তামিম৷ তিনি বলেন, ‘‘পোশাক খাত অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ গ্যাসের অভাবে কারখানা চালু রাখা কঠিন হচ্ছে৷''
আর্থার সুলিভান, আরাফাতুল ইসলাম/জেডএইচ