পাকিস্তানের গৃহহীন মানুষগুলি
২৫ জুন ২০১৪এই সব গৃহহীন মানুষদের জন্য পাকিস্তান সরকার কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না বলে অভিযোগ মানবাধিকার কর্মীদের৷ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এ পর্যন্ত উত্তর ওয়াজিরিস্তান ছেড়েছেন প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার মানুষ৷ এর মধ্যে অনেকেই প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন৷ এ মাসের প্রথম দিকে তালেবানের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলে ঘর ছাড়া শুরু করেন তাঁরা৷
বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি
২৩শে জুন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় মানুষদের নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য তাদের জঙ্গি দমন অভিযান স্থগিত করে৷ তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা৷ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, এরই মধ্যে কয়েক'শ স্থানীয় ও বিদেশি জঙ্গিদের হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে তারা৷
পাকিস্তানের এক মানবাধিকার কর্মী ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘গত কয়েক বছরের মধ্যে উপজাতীয় ঐ এলাকা থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ স্থানান্তরিত হয়েছে৷ সেনা অভিযানের নামে যা হচ্ছে তা রীতিমত মানবাধিকবার লঙ্ঘণ, কারণ মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, নেই খাবার৷ তাই ঐ সব এলাকার মানুষের দারিদ্র্য চরমে পৌঁছেছে৷''
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এক শরণার্থী জানান, ‘‘যাঁদের সামর্থ্য আছে তাঁরাই অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছেন৷ কিন্তু অনেকেই নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে চান না৷ নিজের ঘর আঁকড়ে পরে থাকেন৷''
পাকিস্তানের অন্যতম রাজনীতিবিদ ইমরান খান বলেন, ‘‘ওয়াজিরিস্তানে প্রতিদিনই সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে৷ সেখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ গৃহহীনদের মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার শিশু এবং ১ লাখ ১০ হাজার নারী৷ তাঁদের হাতে বেশি পয়সা নেই, যা দিয়ে গাড়ি করে নিরাপদ স্থানে যেতে পারেন তাঁরা৷ তাই পায়ে হেঁটেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে তাঁদের৷'' খান তাই পাকিস্তান সরকারকে শরণার্থীদের ত্রাণ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন৷ প্রসঙ্গত, ইমরান খানের দল তালেবানের সাথে শান্তি আলোচনায় বরাবরই কাজ করে যাচ্ছে৷
ইসলামাবাদভিত্তিক সাংবাদিক মাতিউল্লাহ জান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এটা গণমাধ্যমের দায়িত্ব৷ তাদের উচিত ওয়াজিরিস্তান ছেড়ে যাঁরা পালিয়ে এসেছেন তাঁরা কী অবস্থায় আছেন, তা তুলে ধরা৷ এটা সত্যিই লজ্জাজনক যে এই ইস্যুটির চেয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক ইস্যুগুলো বড় বেশি প্রাধান্য পায় গণমাধ্যমে৷''
তবে এটাও সত্যি যে, উত্তর ওয়াজিরিস্তানে সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে সমর্থন করেন পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষ৷ স্থানীয় সাংবাদিক মোহসীন সাঈদের কথায়, ‘‘জঙ্গিদের বিরুদ্ধে এই অভিযানে আমার পুরোপুরি সমর্থন রয়েছে৷ কেননা এই জঙ্গিরা যে কোনো সময় শহরে ঢুকে হামলা চালাতে পারে এবং সেরকম হলে, তখন তাদের হাত থেকে কেউ-ই রেহাই পাবে না৷''