কক্সবাজার পুলিশকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি বলেছেন, ‘‘আমরা নতুন করে শুরু করতে চাই৷ ভালো কিছু করতে চাই৷’’
এবার যাদের বদলি করা হলো তাদের মধ্যে আছেন এসআই, এএসআই এবং কনেস্টবল৷ এ পর্যন্ত মোট এক হাজার ৩৪০ জনকে বদলি করা হয়েছে বলে ডিআইজি জানিয়েছেন৷ এর মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজারে পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ শীর্ষ ৮ কর্মকর্তা, ৮ থানার ওসিসহ ৩৪ পরিদর্শক, ১৫৮ জন এসআই, ৯২ জন এএসআই, ১০৫৫ জন নায়েক ও কনস্টেবল৷ তাদের সবাইকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের বাইরে বদলি করা হয়েছে৷
টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও এসআই লিয়াকত সিনহা হত্যায় গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন৷
গত ১৬ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেনকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়৷ বুধবার কক্সবাজারে নতুন এসপি হিসেবে যোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান৷ ২১ সেপ্টেম্বর বদলি করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপারসহ ৭ শীর্ষ কর্মকর্তাকে৷ আর বৃহস্পতিবার রাতে ৮ থানার ওসিসহ ৩৪ পরিদর্শককে বদলি করা হয়৷ ওই সব পদে নতুন কর্মর্তাদের কেউ কেউ যোগ দিয়েছেন৷ অন্যরা দুই-একদিনের মধ্যেই যোগ দেবেন৷
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘কক্সবাজার পুলিশকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে৷ আমরা চাই এখানকার পুলিশ যাতে সুন্দরভাবে কাজ করে৷ আর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে৷ অপরাধ প্রমাণ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হকে৷ আইনের বাইরে যারা যাবেন, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে৷’’
‘‘যারা নতুন যোগ দিচ্ছেন তাদের পেশাদারিত্ব ও সততার ওপর আমরা জোর দিচ্ছি৷ আগে অনেকেই এখানে ঘুরে ঘুরে থাকতেন৷ আমরা তার প্রমাণও পেয়েছি,’’ জানান ডিআইজি৷
জানা গেছে, মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ জিজ্ঞাসাবাদ শেষ৷ আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এই পর্যায়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশে শুদ্ধি অভিযান চালানো হচ্ছে৷ পুলিশ সদর দপ্তর চাইছে পুরনো পুলিশ সদস্যদের কোনো ছায়াও যেন কক্সবাজারে না থাকে৷ বিশেষ করে টেকনাফের অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ‘ক্রসফয়ার বাণিজ্য’, ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ আছে৷ সেই সব অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে৷
মেজর (অব.) সিনহা হত্যার তদন্ত:
৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভে মেজর (অব.) সিনহাকে হত্যা করা হয়৷ এই হত্যা মামলাটির তদন্ত করছে র্যাব৷ র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের প্রধান লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, ‘‘এই মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ তাদের মধ্যে ১২ জন স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে৷ এখনো তদন্তের কাজ চলছে৷ আমরা আশা করি, যথাসময়ে চার্জশিট দিতে পারবো৷ এই মামলায় সব আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷’’ অবশ্য এই মামলার প্রধান আসামিদের একজন ওসি প্রদীপ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি৷
এদিকে মেজর (অব.) সিনহার বোন শারমীন শাহরিয়ার ফেরদৌস বলেন, ‘‘তদন্তকারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন৷ তবে তদন্তের এই পর্যায়ে আমাদের খুব সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই৷ আমরা তখনই সন্তুষ্ট হবো, যখন সিনহা হত্যার বিচার পাব৷’’ কক্সবাজারের তখনকার এসপি এবিএম মাসুদ হোসেনকে আসামি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আদালতে আবেদন করেছিলাম৷ আদালত আবেদন নথিভূক্ত করে বলেছেন এটা তদন্ত কর্মকর্তার এখতিয়ার৷ তিনি চাইলে আসামি করতে পারেন৷ আমরা তো আর তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করতে পারি না৷ তিনি কী করেন দেখি৷ তারপর তো আমাদের উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে৷’’