কঠোর প্রশাসনও থামাতে পারছে না ঈদযাত্রা
১৮ মে ২০২০করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে দেশে প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ আছে গণপরিবহন৷ প্রতিদিনই রেকর্ড সংখ্যায় নতুন রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন সরকার ঈদের ছুটি অন্তর্ভুক্ত করে সাধারণ ছুটির মেয়াদ আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে এবং জনগণকে এ বছর যে যেখানে আছে সেখানে থেকেই ঈদ উদযাপনের পরামর্শ দিয়েছে৷
ঘরমুখো মানুষের স্রোত আটকাতে ঈদের আগে ও পরে সাত দিন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের যাতায়াত আটকাতে ঘোষণা দিয়ে রাস্তায় নেমেছে প্রশাসন৷
রোববার মাঠ পর্যায়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আইজিপি বেনজীর আহমেদ রাজধানী ঢাকাকে অবরুদ্ধ করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানায় বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনেটন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷
বেনজীরের নির্দেশ ছিল, ‘‘সরকারের পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত যেন কোনোভাবেই ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় এবং ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে কেউ যেতে না পারে৷ একইভাবে প্রতিটি জেলা ও মহানগরীতেও জনস্বার্থে কঠোরভাবে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করা হবে৷’’
রোববার সকাল থেকেই রাজধানী ছাড়তে উদ্যোত মানুষের ঢল আটকাতে সড়কগুলোতে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকায় থাকার খবর নানা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে৷ তারপরও মানুষের ঢাকা ছাড়া থেমে নেই৷
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মানুষ নিজের বা ভাড়া গাড়িতে চেপে বাড়ির পথে রওয়ানা হয়েছেন৷ কেউ কেউ ছোট ছোট যানবাহনে চড়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পথ পাড়ি দিচ্ছেন৷
রোববার দক্ষিণাঞ্চলমুখী অনেক ব্যক্তিমালিকানাধীন গাড়ি মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে ঢাকায় ফেরতও পাঠিয়েছে পুলিশ৷ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জের প্রবেশ মুখ সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়ায় চেক পোস্ট বসিয়ে পুলিশ এ কাজ শুরু করেছে৷ জরুরি পণ্যবাহী যান এবং জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া কেউ এই চেক পোস্ট পার হতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ৷
কিন্তু থামছে না মানুষ৷ একদিক দিয়ে যেতে ব্যর্থ হলে গাড়ি ঘুরিয়ে অন্যদিকে রওয়ানা হচ্ছে৷ ফলে সোমবার অনেকটা বাধ্য হয়েই মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে সব ধরনের ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷
করোনা সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসনের অনুরোধে সোমবার বেলা ১১টা থেকে সব ধরনের যাত্রী ও যানবাহন পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় ফেরি কর্তৃপক্ষ৷
এই নিষেধাজ্ঞা কতদিন বহাল থাকবে তা জানতে ডয়চে ভেলে থেকে টেলিফোনে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি৷
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, এই ঘাট দিয়ে রোববার মধ্যরাত থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপার বন্ধ করে দিয়ে শুধু পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের জন্য চার-পাঁচটি ফেরি সচল রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু ফেরিগুলো ঘাটে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গে শতশত মানুষ নদী পার হওয়ার জন্য হুড়মুড় করে ফেরিতে উঠে যেত৷
ফলে কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়৷ যার ফলে এখন পণ্যবাহী পিবহনগুলো নাদী পার হতে না পেরে বিপাকে পড়েছে৷
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের গোলড়া এলাকায়ও রোববার থেকে পুলিশ তল্লাশি চৌকি বসিয়ে জরুরি ও পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া বাকি যানবাহন ফিরিয়ে দিচ্ছে৷ পুরো সড়কে চলছে পুলিশি টহল৷
৯ মে’র ছবিঘরটি দেখুন...