1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কড়া শরণার্থী নীতি ইউরোপের নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবে?

১৫ মে ২০২৪

মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন বেআইনি বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের যে উদ্যোগ চূড়ান্ত করলো, তার ফলে আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টার দক্ষিণপন্থি শিবিরের প্রতি সমর্থন কমবে বলে আশা করছে অন্যান্য দল৷

https://p.dw.com/p/4frjv
সীমান্তে বেড়া এবং নজরদারী দুটোই বাড়াচ্ছে গ্রিস৷
দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছে যে অনিয়মিত অভিবাসনের বোঝা তাদের বেশি সামলাতে হচ্ছে ছবি: Nicolas Economou/NurPhoto/picture alliance

আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলি বহিরাগতদের রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত নীতির ব্যাপক সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিলো৷ মঙ্গলবার ইইউ অভিবাসন ও রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত নতুন বোঝাপোড়ার অংশ হিসেবে দশটি আইন অনুমোদন করেছে৷ সেই একক ইউরোপীয় নীতির আওতায় অবৈধ বহিরাগতদের ঢল সামলাতে এক গুচ্ছ পদক্ষেপ স্থির করা হয়েছে৷ দীর্ঘদিনের আপত্তির কারণে হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ড এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও সেটি থামাতে ব্যর্থ হয়েছে৷ নতুন সংস্কারের ফলে শুধু ইইউ-র সীমান্তবর্তী দেশগুলিকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বোঝা সামলাতে হবে না, বাকিদেরও সংহতি দেখাতে হবে৷ কোনো সদস্য দেশ তাদের আশ্রয় দিতে না চাইলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে৷

ইউরোপের মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনের ঠিক আগে অভিবাসন ও আশ্রয় সংক্রান্ত কড়া পদক্ষেপ নিয়ে ভোটারদের মন জয় করার আশা করছে৷ কট্টর দক্ষিণপন্থি ও পপুলিস্ট দলগুলি এতকাল মানুষের মনে বহিরাগতদের ঢল সংক্রান্ত উদ্বেগ কাজে লাগিয়ে সমর্থন আদায়ের যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল, ইউরোপীয় স্তরে নতুন সমাধানসূত্র সেই হাতিয়ার কিছুটা হলেও ভোঁতা করে দেবে বলে অন্যান্য রাজনৈতিক শিবির মনে করছে৷ বিশেষ করে ২০১৫ সালে সিরিয়া ও ইরাকের যুদ্ধের কারণে প্রায় এক কোটি বহিরাগত ইইউৃতে প্রবেশ করার পর জনসংখ্যার একটা উল্লেখযোগ্য অংশের মনে বিষয়টি নিয়ে কড়া মনোভাব দেখা যাচ্ছে৷

আগামী ৬ থেকে ৯ই জুন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় চরম দক্ষিণপন্থি ও পপুলিস্ট দলগুলির প্রতি যথেষ্ট সমর্থন দেখা যাচ্ছে৷ মঙ্গলবারের সিদ্ধান্তের পর বাকি দলগুলি নির্বাচনি প্রচারে বিষয়টি তুলে ধরে কতটা সমর্থন ফিরে পেতে পারে, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই তা জানা যাবে৷ তবে মনে রাখতে হবে, যে ইইউ-র এই সংস্কারের উদ্যোগ ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হবে৷ ভোটারদের মনে এতটা ধৈর্য আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়৷ ২০২৩ সালে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ আইনি পথে ইউরোপে প্রবেশ করেছে৷ অন্যদিকে প্রায় দশ লাখ মানুষ অনুমতি ছাড়াই ইইউ দেশগুলিতে বাস করছে৷ তার মধ্যে বৈধ ভিসা নিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করে থেকে যাওয়া মানুষের ক্ষেত্রে নতুন সংস্কারের উদ্যোগ কার্যকর হবে না৷ অর্থাৎ গত বছর যে প্রায় তিন লাখ মানুষ বিনা অনুমতিতে ইউরোপে প্রবেশ করেছে, শুধু তাদের মতো অভিবাসন ও আশ্রয়প্রত্যাশীদের ক্ষেত্রেই নতুন নিয়ম প্রয়োগ করা হবে৷

ইউরোপের মানুষের উদ্বেগ কাটাতে বহিরাগতদের ঢল সামালানোর কড়া উদ্যোগ সম্পর্কে সমালোচনাও কম নয়৷ বহির্সীমানায় আটক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটক করা, এমনকি শিশুদেরও আঙুলের ছাপ নথিভুক্ত করার মতো ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক দূর হয় নি৷ আশ্রয়প্রার্থীদের ইউরোপ থেকে দূরে রাখতে এবং তাদের আশ্রয় অধিকার খর্ব করতে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলির সঙ্গে ইইউ-র বোঝাপড়ার বিরুদ্ধেও সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷

এসবি/এসিবি (এপি, ডিপিএ)