কম পানিতে চাষ নিয়ে ইউরোপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা
১৫ মার্চ ২০১৯এক বিশাল খেতে প্রত্যেক মরসুমে প্রায় ১০ লক্ষ কিলোগ্রাম পরিমাণ পালং বা লেটুসের মতো পাতা উৎপাদন হয়৷ জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে শস্য উৎপাদনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, তা বোঝার জন্য এই ক্ষেত্র গবেষকদের কাছে খোলা আকাশের নীচে এক গবেষণাগারের মতো৷ জলবায়ু সংক্রান্ত বর্তমান মডেল সঠিক প্রতিপন্ন হলে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলে অদূর ভবিষ্যতে পানির মারাত্মক অভাব দেখা যাবে৷ এমনটা ঘটলে কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও তার মানের উপর কী প্রভাব পড়বে, বিজ্ঞানীরা তা জানতে চান৷ খাদ্য বিষয়ক মাইক্রোবায়োলজিস্ট মাবেল গিল বলেন, ‘‘২৫ শতাংশ কম পানি ব্যবহার করে সেচের কাজ করলে আদতে সুবিধাই হবে বলে আমাদের ধারণা৷ কম পানি ব্যবহার করলে পরিবেশের উপকার হবে৷ তাছাড়া এর ফলে কিছু শাকসবজি আরও বেশিদিন তাজা থাকবে৷''
গবেষকদের ধারণা, বিভিন্ন পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে পানির অভাব পূরণ করা সম্ভব৷ গাছপালার উপর এই অবস্থার প্রভাব তাঁরা খতিয়ে দেখছেন৷ মাবেল গিল মনে করেন, ‘‘কিছু প্রজাতি খরা ও পানির অভাব আরও ভালোভাবে সামলাতে পারে৷ ভিন্ন ধরনের পুষ্টির উপাদানও সৃষ্টি করা যেতে পারে৷ যেমন কৃষিপণ্যের মান বাড়াতে সারের মধ্যে আরও নাইট্রোজেন যোগ করা যায়৷ শোধনাগারের মতো পানির বিকল্প উৎস ব্যবহার করাও সম্ভব কিনা, তাও আমরা খতিয়ে দেখছি৷ সেচ ব্যবস্থায় এমন পানি ব্যবহার করলে শাকসবজি নিরাপদ হবে কিনা, সেগুলি কত সময় তাজা থাকবে – সে সবও আমরা দেখতে চাই৷''
ফসল তোলার আগে ও পরে প্যাথোজেন, টক্সিন, কীটনাশক ও অন্যান্য বিষয় শাকসবজির নিরাপত্তা ও মানের উপর কত প্রভাব ফেলে, বিজ্ঞানীরা সেই প্রশ্নেরও উত্তর চান৷ পরিবর্তনশীল জলবায়ুর ফলে সমস্যাগুলিও কীভাবে বদলে যাবে, সেটাও বড় প্রশ্ন৷ ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল কি আরও শুষ্ক হয়ে উঠবে এবং উত্তরে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত বাড়বে? খাদ্য মাইক্রোবায়োলজিস্ট হিসেবে আনা আলেন্দে বলেন, ‘‘আমাদের মনে হয়েছিল, আর্দ্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষিপণ্যের মান ও নিরাপত্তাও বাড়বে৷ কিন্তু এখন আমরা জানি, যে আর্দ্রতা আসলে কিছু ধরনের প্যাথোজেনকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে৷ তাই আমরা বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা একটু কমানোর পক্ষে সওয়াল করছি৷ এই সব কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সময়ে সেই মাত্রা ৯৫ থেকে ৯৬ শতাংশের নীচে আনতে হবে৷''