করোনা সংকট : কোথায় ইউরোপ আর কোথায় আফ্রিকা
১১ জুন ২০২০সম্প্রতি তাঞ্জানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি দাবি করেছেন তার দেশে আর করোনায় সংক্রমিত রোগী নেই৷ এ দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, কেননা, এপ্রিলের শেষ দিকে করোনা সংক্রান্ত তথ্য জানানো বন্ধ করে দিয়েছিল তার সরকার৷ এর কঠোর সমালোচনা করেছিলেন বিরোধী দল চাদেমা পার্টির নেতা ফ্রিম্যান মবোয়ে৷ হামলা হয়েছে তার ওপর৷ তিনি এখন হাসপাতালে৷
আফ্রিকার আরো কিছু দেশের সরকার করোনা সংক্রান্ত তথ্য ঠিকভাবে প্রকাশ করছে না৷ লন্ডনভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউজের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ওসমান দার মনে করেন, আফ্রিকার দেশগুলোতে যে কোনো বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করাই কঠিন৷ এতে সরকারের অনিচ্ছা বা প্রশাসনের অদক্ষতার ভূমিকা তো থাকেই, অন্য কিছু বাস্তবতাও দেয়াল হয়ে সামনে দাঁড়ায়৷ তবে সঠিক তথ্যের অভাবের জন্য তাঞ্জানিয়া বা তাঞ্জানিয়ার মতো অন্য কোনো আফ্রিকান দেশের সরকারকেই দায়ী করতে রাজি নন ওসমান দার৷ তাঁর মতে, আফ্রিকায় অনেক বেসরকারি সংস্থা কাজ করছে, তারা সক্রিয় হলে এ সমস্যা এত প্রকট হতো না৷
এছাড়া রাজনীতি, অর্থনীতি এবং অশিক্ষাকেও আফ্রিকায় করোনা সংকট নিরসনের বড় অন্তরায় মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ৷
লকডাউনে দেশের অর্থনীতির ওপর যে চাপ পড়ে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হয় আফ্রিকার অনেক দেশের সরকারকে৷ তাছাড়া করোনা সংকটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে গেলে অন্য রোগের চিকিৎসা, টিকা দেয়ার কর্মসূচিসহ সবকিছু প্রায় বন্ধ হয়ে যায়৷ ফলে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় অনেকের৷ ওসমান দার মনে করেন, খোদ ব্রিটেনেই যেখানে করোনা সংকট শুরুর পর থেকে মারা যাওয়া রোগীদের অন্তত ২০ ভাগের করোনা সংক্রমিত না হয়েও বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার আশঙ্কা, সেখানে আফ্রিকার দেশগুলোতে চিত্রটা আরো ভয়াবহ হতেই পারে৷
আফ্রিকার দেশগুলোতে করোনা নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের খবর জানালেও অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়৷ ঘানার তামালেতে প্রথম দশজন সংক্রমিতের সুস্থ হওয়ার খবর জানিয়েছিল সরকার৷ তারপরের পরিস্থিতি জানিয়েছেন সেই শহরের ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের মাইক্রোবায়োলজিস্ট কারেজ কোসি, ‘‘তিন সপ্তাহ আগেও অনেক মানুষকে কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেখেছি৷ এখন অনেকেই মাস্কও পরছেন না৷’’
ক্রিস্টিনা ক্রিপাল/ এসিবি