করোনা ভাইরাস: চাপের মুখে গণতন্ত্র!
৯ এপ্রিল ২০২০চীন সরকার গত ২৩ জানুয়ারি যখন উহান শহরকে লকডাউন করে, এশিয়ার বাইরের দেশগুলো তখন সেদিকে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়েছে৷ করোনাভাইরাস যে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার শিল্পোন্নত দেশগুলোতেও আঘাত হানতে পারে তা বোঝা যায়নি তখন৷
ধীরে ধীরে নিউইয়র্ক, বার্লিন, মাদ্রিদের মতো ইউরোপীয় শহরগুলোতেও কোভিড-১৯ ভাইরাস থেকে বাঁচতে জনগণের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে৷ ঘরের বাইরে যাওয়ায় এসেছে নিষেধাজ্ঞা, জানানো হয়েছে জীবন যাপনে পরিবর্তন আনার আহ্বান৷ সংসদ অধিবেশন বসছে সীমিত পরিসরে৷ কোনো কোনো দেশের সরকারপ্রধানও হয়েছেন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত৷
ওদিকে চীনের মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে৷ তাদের দেখে অনেক দেশের মানুষের এখন হয়ত হিংসে হচ্ছে৷
এমন পরিস্থিতিতে স্বৈরতন্ত্র কি গণতন্ত্রের চেয়ে বেশি কার্যকর? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করেছেন অস্ট্রেলিয়ার গবেষক তামারা এহস৷ করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে চীনের সাফল্য প্রশংসনীয় হলেও স্বচ্ছতা জলাঞ্জলি দেয়ার বিষয়টিকে অবশ্য তিনি সমালোচনার চোখেই দেখছেন৷
দেশে দেশে মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ
সান্ধ্য আইন, বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ- এসব এখন আর স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অংশ নেই৷ এই সত্য স্বীকার করে ইইউ কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেরা জুরোভা বলেছেন, ইউরোপের দেশগুলো এখন এক ধরনের 'জরুরি আইন' কার্যকর করেছে৷
অস্ট্রেলিয়ার গবেষক তামারা এহস অবশ্য এই পদক্ষেপগুলোকেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপযোগী মানতে রাজি, যদি সেগুলো যৌক্তিকভবে নেয়া হয় এবং সব পদক্ষেপ করোনাভাইরাস রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে৷
সংসদীয় নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব
তামারা এহস মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতেও সংসদ কার্যকর থাকা উচিত, কারণ, "সংসদ এমন জায়গা যেখানে সব কন্ঠ শোনা যায়, যেখান থেকে বিরোধী মত বেরিয়ে আসে৷" কিন্তু হাঙ্গেরিতে সংসদ অধিবেশন চলতে দেয়া হয়নি৷ অথচ প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশেষ ক্ষমতা পেয়ে গেছেন৷
সুশীল সমাজের গুরুত্ব
তামারা এহস মনে করেন, চলতি সময়েও সরকারের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সুশীল সমাজ৷ তার মতে, গণতান্ত্রিক সরকার গুলো খুব দ্রুত স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবে এমন আশঙ্কা নেই৷ তবে কোথাও কোথাও জনমনে ভয় জাগতে পারে বলে তিনি মনে করেন৷
লিসা হ্যানেল/এসিবি/কেএম