করোনা কি মানুষকে অস্থির করে তুলছে?
২৬ মার্চ ২০২০
করোনা ভাইরাসের কুপ্রভাব যে শুধু স্বাস্থ্য পরিবেষা অবকাঠামোর উপর পড়ছে না, সে বিষয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই৷ কোটি কোটি মানুষের উপার্জন অনিশ্চিত হয়ে উঠছে এবং অসংখ্য ছোট-বড় ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ছে৷ বিভিন্ন দেশের সরকার বিশাল অঙ্কের অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করছে৷
কিন্তু লকডাউন, কারফিউ ইত্যাদি কড়া পদক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষের মনে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে, তার মাত্রা ও পরিণাম সম্পর্কে এখনো কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না৷ তবে কিছু ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে৷ যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত দুই সপ্তাহে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাগুলি বিক্রির প্রবণতা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে৷ একটি বন্দুক প্রস্তুতকারক কোম্পানি এমনকি ৮০০ শতাংশ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে৷ অনেকে জানিয়েছেন, করোনা সংকটের ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং আত্মরক্ষার বাড়তি তাগিদ অনুভব করছেন৷ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী করোনা সংকট সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে চুরি-ডাকাতির মতো অপরাধের মোকাবিলা করতে তাদের হাতে সময় থাকবে না বলেও অনেকে আশঙ্কা করছে৷
করোনা-সংকটের ফলে বিশ্বের অনেক দেশে কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে৷ জাতিসংঘও করোনার সংক্রমণ কমাতে এমন আবেদন করছে৷ যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, জার্মানি, ইরানসহ বেশ কিছু দেশে হাজার হাজার মানুষকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা অবকাঠামোর পক্ষে তাদের সামলানো কঠিন হয়ে উঠছে৷ যেসব কয়েদির মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে এবং যাদের অপরাধের মাত্রা তেমন গুরুতর নয়, মূলত তাদেরই মুক্ত করছে অনেক দেশ৷ সেক্ষেত্রে বাকি বন্দিদের মধ্যে প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় রাখা কিছুটা সহজ হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছে৷ কিন্তু আচমকা বন্দিদের মুক্তির ফলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে কিনা, সে বিষয়ে অনেকের মনে সংশয় রয়েছে৷
পরিস্থিতি সামলাতে প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ঘাটতিও অস্থিরতার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷ লকডাউন বা কারফিউ সত্ত্বেও খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জোগান নিশ্চিত করতে না পারলে মানুষের ক্ষোভের মাত্রা বাড়তে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)