করোনা সংকটের কারণে অন্যান্য রোগ অবহেলা চলবে না
২৭ এপ্রিল ২০২০বিশ্বের প্রায় সব দেশ করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ব্যস্ত৷ সর্বশক্তি প্রয়োগ করে, অর্থ, সম্পদ, সময়, শ্রম ব্যয় করে টিকা ও ওষুধের খোঁজ চলছে৷ লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ এমন অবস্থায় সমস্যায় পড়ছেন ‘সাধারণ' রোগীরা৷ করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্যস্ত৷ প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে তাঁরাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন৷ ফলে মানুষজন তাঁদের এড়িয়ে চলছেন৷ অনেক হাসপাতালেও বাকি চিকিৎসা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে৷
এমন অবস্থায় বাকি রোগীরা কী করবেন? তাঁদের চিকিৎসা কি করোনা সংকটের শেষ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে? ম্যালেরিয়া, এইডস ইত্যাদি রোগের বিরুদ্ধে সংগ্রামও কি থেমে যাবে? অন্যান্য রোগের টিকাদান কর্মসূচিও বর্তমান সংকটের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যার সম্মিলত ফল মারাত্মক হতে পারে৷
এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছে৷ আফ্রিকা ছাড়াও বিশেষ করে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা পরিষেবা চালু না থাকলে নতুন সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ডাব্লিইউএইচও৷ আফ্রিকার ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরো বেশি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফ্রিকার ভারপ্রাপ্ত প্রধান ড. মাৎশেদিসো মোয়েটি বলেন, কোভিড-১৯-এর গুরুত্ব সত্ত্বেও অন্যান্য জরুরি রোগের প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচি অবহেলা করলে চলবে না৷ বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ উপলক্ষ্যে তিনি এই মন্তব্য করেন৷ তিনি বলেন, যক্ষ্মারোগ ও ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে টিকা যথেষ্ট সফল হয়েছে৷ তাই এই উদ্যোগে কোনো ঢিলেমি চলবে না৷
পোপ ফ্রান্সিস রবিবারের প্রার্থনার পর করোনা মহামারি সত্ত্বেও ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার ডাক দিয়েছেন৷ অনেক দেশের কোটি কোটি মানুষ ম্যালেরিয়ার কারণে হুমকির মুখে রয়েছেন বলে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, শনিবার ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রামের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস পালিত হয়েছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, ২০১৭ সালে গোটা বিশ্বে প্রায় ২১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ার শিকার হয়েছেন৷ সেই রোগের কারণে প্রায় ৪ লাখ ৩৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ প্রায় ৯০ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা আফ্রিকা মহাদেশে ঘটেছে৷ করোনা সংকটের জের ধরে আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ার কারণে মৃত্যুর ঘটনা দ্বিগুণ হতে পারে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)