সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও ইউরোপে আরো ছাড়

যাবতীয় বাধানিষেধ দূর করে পুরোপুরি করোনা মহামারির আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব কিনা, সে বিষয়ে তর্কবিতর্ক রয়েছে৷ তবে ইউরোপের কিছু দেশ ওমিক্রন ঢেউ সত্ত্বেও অনেক বিধিনিষেধ শিথিল করছে৷ জনসাধারণের একটা বড় অংশ করোনা টিকা নেওয়ায় এমন ‘সাহসি' পদক্ষেপ নিতে চাইছে বেশ কিছু দেশের সরকার৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বিধিনিয়ম শিথিল করার পক্ষে সওয়াল করছে৷ যে সব দেশের মানুষের মধ্যে উচ্চ মাত্রায়  প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে গণস্বাস্থ্য পরিষেবা কাঠামো যথেষ্ট শক্তিশালী এবং মহামারির প্রবণতা সঠিক দিশায় এগোচ্ছে, সেখানে এমন পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলে ডাব্লিউএইচও মনে করে৷ তবে রাজনৈতিক চাপের কারণে তড়িঘড়ি করে এমন বেপরোয়া সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান৷

এমন প্রেক্ষাপটে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং বেশ কয়েকটি নর্ডিক দেশ করোনা সংক্রান্ত  বিধিনিয়ম শিথিল করছে৷ নরওয়ে ও ডেনমার্কে সংক্রমণের হার বেড়ে চললেও সরকার এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ ডেনমার্কের অনেক মানুষ অবশ্য স্বেচ্ছায় মাস্ক পরছেন৷ মহামারি শেষ হচ্ছে, এমনটা ধরে নিয়েই কড়াকড়ি শিথিল করার ঝুঁকি নিচ্ছে বেশ কিছু দেশ৷ গত সপ্তাহ থেকে ইংল্যান্ডে আর প্রায় কোনো বিধিনিয়মই চালু নেই৷ শুধু পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়লে মানুষকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হচ্ছে৷ সুইজারল্যান্ডও বুধবার জানিয়েছে, যে সংক্রমণ বেড়ে চললেও হাসপাতালের উপর তেমন চাপ না থাকায় অনেক বিধিনিয়ম তুলে নেওয়া হচ্ছে৷

ইউরোপের সব দেশ অবশ্য করোনা সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করছে না৷ ইটালি বরং আরও কড়া নিয়ম চালু করেছে৷ সোমবার থেকে ব্যাংক ও ডাকঘরে প্রবেশের জন্য হেলথ পাস দেখানোর পাশাপাশি করোনা টেস্টের ফলও দেখাতে হচ্ছে৷ ৫০ বছরের বেশি বয়সের কোনো মানুষ টিকা না নিলে ১০০ ইউরো জরিমানাও করা হচ্ছে৷ গ্রিসে ৬০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের জন্য সেই জরিমানার অঙ্ক ৬০ ইউরো৷ ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে অস্ট্রিয়া সবার জন্য করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেবার পর ধাপে ধাপে কিছু পদক্ষেপ নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

জার্মানিতে বিভিন্ন মহলের চাপ সত্ত্বেও ফেডারেল সরকার এখনো করোনা সংক্রান্ত কড়াকড়ি তুলে নিতে প্রস্তুত নয়৷ পরিস্থিতি বিবেচনা করে দায়িত্বজ্ঞানের ভিত্তিতে বিধিনিয়ম শিথিল করা হবে বলে সরকারি এক মুখপাত্র জানিয়েছেন৷ তবে এখনো সেই সময় আসে নি বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ বিরোধী ইউনিয়ন শিবির অবশ্য এখন থেকেই এমন পদক্ষেপের প্রস্তুতির জন্য চাপ দিচ্ছে৷ সরকারের শরিক উদারপন্থি এফডিপি দলও স্পষ্ট পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষেই সংক্রমণের হার আবার কমতে শুরু করবে৷ কয়েকটি রাজ্যের সরকার এখনই কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করছে৷ আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারি চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা হবে৷ তখন শর্তসাপেক্ষে বিধিনিষেধ শিথিল করার সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, এপি)