‘করোনাটুন’: কভিড-১৯ যখন কার্টুন
করোনা ভাইরাস ছাড়া গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আর কোন খবর নেই। আতঙ্ক এবং দুঃখ প্রকাশের জন্য কার্টুনিস্টদের কেবল কয়েকটি আঁচড় কাটতে হয়েছে। তবে কিছু কার্টুন এই সংকট শেষ হওয়ার আভাস দিচ্ছে।
উহান, কোয়ারান্টিন
প্রথমে সবাই ভেবেছিল করোনা ভাইরাস কেবল চীনের সমস্যা। উহানের নামও কেউ শোনেনি। বেইজিং কর্তৃপক্ষ বিপজ্জনক এই ভাইরাস ছড়ানোর খবর গোপন রেখেছিল। এরপর উহান শহর আর হুবেই প্রদেশের মানুষকে গৃহবন্দি করে রাখে তারা। পুরো বিশ্ব এটা দেখে ভেবেছিল এই পদ্ধতি নিরাপদ।
ভূ-পর্যটক
কিন্তু এই ভাইরাসকে কোন সীমান্ত আটকে রাখতে পারেনি। ডাচ কার্টুনিস্ট জির্ড রোয়ার্ডস ভূ-পর্যটকের নতুন সংস্করণ তুলে ধরেছেন। হঠাৎ করেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক মানুষ অসুস্থ হতে শুরু করে এবং অনেকে মারা যায়।
কভিড-১৯ এবং মানবজাতি
পুরো বিশ্বের মানুষের কাছে এই ভাইরাস অপ্রতিরোধ্য। কোন ভ্যাকসিন নেই, নেই কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। পাওলো স্যালেরি সেই হতাশা’র অনুভূতি ফুটিয়ে তুলেছেন তার শিল্পের মাধ্যমে।
দুঃস্বপ্ন
এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে বিশ্বের আক্রান্ত দেশগুলোতে ঘরে থাকার নির্দেশ জারি হয়। কিন্তু ঘরে থাকলেও মানুষের মনে আতঙ্ক ছিলো। তুর্কি কার্টুনিস্ট মেনেকসে ক্যাম এখানে একটি ছবি এঁকেছেন যেখানে একটি মেয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছে এবং ভেড়া গোনার বদলে ভাইরাসের সংখ্যা গুণছে।
আমি আমার দলকে চাই
সামাজিক দূরত্বের কারণে সবাই নিজেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মানুষ মনে করছিলেন। এই কার্টুনে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড দলের একজন ভক্ত তার প্রিয় বোরসিগপ্লাৎস স্কয়ার ছেড়ে যেতে চাচ্ছেন না, এই স্থানে ক্লাবটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। আর যেখানে অনেক শিরোপা জয়ের উদযাপন হয়েছে।
সংগীত যখন যোগাযোগের মাধ্যম
ইউরোপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইটালির মানুষ লকডাউনের সময় প্রতি সন্ধ্যায় বারান্দা থেকে সংগীত পরিবেশন করেছেন। কখনো কখনো অনেকে নার্স ও চিকিৎসকদের সম্মান জানাতে হাততালি দিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছেন। বারান্দার এই সংগীত সবাইকে এই বার্তাই দিয়েছে ‘সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।“
দূরত্ব বজায় রাখুন
ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলে সবচেয়ে কড়া কারফিউ ছিলো। জার্মানিতে মানুষের বাইরে বের হওয়ায় বাধা ছিলো না। কিন্তু দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ ছিলো। নির্দেশ অমান্য করলে বড় ধরণের জরিমানা গুণতে হতো।
যেদিকে তাকাও মুখোশ আর মুখোশ
মুখে মাস্ক পড়লে সংক্রমণের ঝুঁকি কম। তাই বেশ কয়েকটি দেশে এটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু যখন দোকানগুলোর সব মাস্ক বিক্রি হয়ে যায় তখন কি করার আছে? রুশ কার্টুনিস্ট সের্গেই বেলোসেরোভ তাই এতে নতুন সংস্করণ যোগ করেছেন।
হাত পরিষ্কার
হাত ধুতে থাকো, ধোও, ধুতে থাকো ধোও। করোনা প্রতিরোধ করতে প্রতিটি দেশের রাজনীতিবিদ এবং চিকিৎসকরা এই কথা বার বার বলেছেন। স্যাম চাচা সেটাই করছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের উদ্ভট কথায় কান দিও না।
ভয়াবহ লড়াই
সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই। গবেষণাগারগুলো ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছে। যতদিন না ভ্যাকসিন পাওয়া যায় ততদিন মানবজাতির সঙ্গে এই ভাইরাসের লড়াইকে কার্টুনের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন ফিলিপাইন্সের শিল্পী জাখ। তিনি বলছেন এই সংগ্রাস চলবে। এর ফলাফল অনিশ্চিত।
দৈত্যের পূর্বাভাস
নিজের নাগরিকদের বাঁচাতে বিশ্ব নেতারা লকডাউন জারি করেন, যার ফলে অর্থনীতিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক কোম্পানি ঋণে জর্জরিত। ত্রাণ কার্যক্রম চালু হলেও লাখ লাখ মানুষ জানেন না কীভাবে তারা বাড়ি ভাড়া দেবেন বা খাবারের অর্থ জোগাড় করবেন। চীনের রডরিওগো’র কাছে ভাইরাসের চেয়েও বড় দৈত্য অর্থনৈতিক সংকট।
ইতিহাসের পাতায়
স্প্যানিশ ফ্লু এর মত একদিন এই মহামারি ইতিহাস হবে। দাদা-নানারা তাদের নাতি নাতনিদের গল্প করবেন কীভাবে তারা খাবার জমা করে রেখেছিলেন। আর দোকানে যখন টয়লেট পেপার শেষ হয়ে গিয়েছিল, তখন কি দুর্দশা হয়েছিল তাদের।