করোনার খরচ তুলতে ধনীদের ওপর কর
১১ ডিসেম্বর ২০২০করোনার কারণে লকডাউন ও অর্থনৈতিক সংকট চলছে প্রায় এক বছর ধরে৷ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আর্জেন্টিনার সরকারও হিমশিম খাচ্ছে পরিস্থিতি সামলাতে৷ এমন পরিস্থিতিতে দেশটির পার্লামেন্টের দুই কক্ষই ধনীদের ওপর এককালীন কর আরোপের পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছে৷
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী যেসব নাগরিকের ব্যক্তিগত সম্পদের আর্থিক মূল্য অন্তত বিশ কোটি পেসো (বাংলাদেশি মুদ্রাতেও প্রায় ২০ কোটি টাকা) এমন ১১ হাজার ৮৬৫ জন আর্জেন্টাইনকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷
আপোর্তে সলিদারিও ই এক্সত্রাওর্দিনারিও বা অসাধারণ সংহতি সহায়তা নামের একটি তহবিল গড়ে তোলা হয়েছে৷ আর্জেন্টিনার মধ্যে ২০ কোটি থেকে ২৯ কোটি পেসোর সম্পদ থাকলে এর শতকরা দুই ভাগ, ৩০ কোটির ওপরে সম্পদের জন্য সম্পদের তিন দশমিক পাঁচ ভাগ অর্থ এই তহবিলে দিয়ে দিতে হবে৷ অন্যদিকে বিদেশে সম্পদ থাকলে সেটির তিন থেকে পাঁচ দশমিক দুই পাঁচ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হবে৷
করোনার ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং দরিদ্রআর্জেন্টাইনদের অবস্থা আরো করুণ হয়েছে৷ তাদেরসহায়তার জন্যই গড়ে তোলা হচ্ছে এই তহবিল৷
সিনেটের বাজেট কমিটির প্রেসিডেন্ট কার্লোস কাসেরিও বলেন, "জনসংখ্যার কেবল শুন্য দশমিক শুন্য দুই শতাংশ মানুষ এই অবদান রাখবে৷ কেউ বিভ্রান্ত হবেন না, আমরা ধনীদের বিরুদ্ধে কোনো আলাদা ব্যবস্থা নিচ্ছি না৷” সরকার করোনার মধ্যে ধনী ও গরীবের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যেই এই তহবিল গঠন করছে বলেও জানান তিনি৷
তবে স্বভাবতই এর তীব্র বিরোধিতাও রয়েছে৷ বিরোধী দল র্যাডিকেল সিভিক ইউনিয়ন- ইউসিআরের সিনেটর এক টুইটে বলেছেন, "আমরা এমনিতেই রেকর্ড পরিমাণ কর নেয়া একটি দেশে বাস করি৷ তারপরও আমাদের রেকর্ড পরিমাণ দারিদ্র্য৷ নতুন কর আরোপ না করে কিভাবে ব্যবস্থাপনা ভালো করা যায়, সেটা শিখতে পারি না আমরা?”
একই ধরনের মন্তব্য দেশটির অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ সেসার লিটভিনেরও৷ এক ইমেইলে তিনি বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় আমাদের আরো অনেক টাকা দরকার সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু আমার ধারণা ধনীদের ওপর এই কর আরোপের মাধ্যমে যা হবে বলে আশা করা হচ্ছে, বাস্তবে হবে তার উলটো৷''
জার্মানিতে সর্বোচ্চ আয়কর ৪৫ শতাংশ, সে তুলনায় আর্জেন্টিনায় সর্বোচ্চ আয়কর ৩৫ শতাংশ৷ কিন্তু আয়কর ছাড়াও দেশটিতে জাতীয়, প্রাদেশিক ও পৌর পর্যায়ে আরো নানা ধরনের কর দিতে হয় নাগরিকদের৷
লিটভিন মনে করেন বিশাল করের বোঝা টানতে টানতে দেশটির জনগণ এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন৷
ইনেস আইসেলে/এডিকে