1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনার জেরে বিপাকে সাধারণ রোগীরা

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
৩০ মার্চ ২০২০

দিল্লিতে অত্যন্ত জরুরি ছাড়া সব সার্জারি বন্ধ। সরকারি হাসপাতালে প্রধাণত এখন করোনার চিকিৎসা হচ্ছে। বিপাকে সাধারণ রোগীরা।

https://p.dw.com/p/3aBNa
ছবি: DW/A. Sharma

একদিনে দিল্লির বাঙালিটোলা চিত্তরঞ্জন পার্কে অন্তত নয় জন রোগীর শ্বাসকষ্টের উপসম করতে হয়েছে ফুসফুস বিশেষজ্ঞ পার্থ প্রতিম বোসকে। এই রোগীরা হাসপাতালে যেতে চাইলেও লাভ হচ্ছে না। অনেক বেসরকারি হাসপাতাল শ্বাসকষ্টের কথা শুনলেই আসতে নিষেধ করে দিচ্ছে। সরকারি হাসপাতাল ব্যস্ত মূলত করোনার চিকিৎসায়। ফলে ডঃ বোসকে নার্স বা সেবিকা পাঠিয়ে অথবা নিজে গিয়ে সেই রোগীদের সুস্থ করে তুলতে হয়েছে। আবার করোনা আতঙ্কের সময়ে রোগীদেরও অনুরোধ, নার্স পাঠালে গোপনে পাঠাতে। না হলে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হলে মুশকিল হবে। আতঙ্ক ছড়াবে।

ডয়চে ভেলেকে ডঃ পার্থ প্রতিম বোস জানিয়েছেন, ''এমনিতেই এই সময়ে শ্বাসকষ্টের রোগীরা একটু অসুবিধায় পড়েন। শীত শেষ করে গরম আসছে। দিল্লিতে এখনও গরম পড়েনি। শীতও নেই। এই অবস্থায় শ্বাসকষ্ট বাড়তেই পারে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ে এটা হয়। তাও তো দিল্লিতে দূষণ অনেকটাই কমে গিয়েছে। একদিনে আমাকে নয় জন শ্বাসকষ্টের রোগীর কষ্ট কমানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে। কিন্তু গোপনে। বহু বেসরকারি হাসপাতাল শ্বাসকষ্টের রোগীর চিকিৎসাই করতে চাইছে না।'' এক রোগীর বক্তব্য, ''নিরুপায় হয়েই চিকিৎসকদের ধরতে হচ্ছে ও তাঁরা এসে কষ্ট দূর করার চেষ্টা করছেন। পুরোটাই গোপনে করতে হচ্ছে।

অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স(এইমস)-সহ অধিকাংশ হাসপাতালের ওপিডি বন্ধ। এইমসের ট্রমা সেন্টারকে পুরোপুরি করোনা ওয়ার্ডে পরিণত করা হয়েছে। চিকিৎসক সুব্রত কুন্ডু ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''বেসরকারি হাসপাতালকেও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। ফর্টিস হাসপাতালে সেই ব্যবস্থা হয়েছে। সব সার্জারি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে পুরোদমে করোনার চিকিৎসা হচ্ছে।'' 

দিল্লিতে লকডাউনের বাজারে চিকিৎসকদের চেম্বার বন্ধ। ফোনে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে নিতে হচ্ছে। সাধারণ কোনও রোগ হলে অসুবিধা হচ্ছে না। কিন্তু রোগ একটু জটিল হলে অসুবিধা হচ্ছে। ডাঃ কুন্ডুর দাবি,  ''৮০ শতাংশ লোকের সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বর হচ্ছে। আমাদের চিন্তা, চিকিৎসকরা করোনায় আক্রান্ত হলে কী হবে?'' সোমবারই দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালের ১৪ জন ডাক্তারও নার্সকে কোয়ারান্টিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন নার্সের জ্বর হওয়ার ফলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দিল্লির চারটি পাঁচতারা হোটেলও চিকিৎসকদের থাকার জন্য ভাড়া করেছে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ সরকার। যাঁরা করোনার চিকিৎসা করছেন, সেই সব চিকিৎসকরা এই হোটেলে থাকবেন। দিল্লির জি বি পন্থ ও এলএনজেপি হাসপাতালের চিকিৎসকরা থাকবেন ললিত হোটেলে।  লখনউতে হায়াত রিজেন্সি সহ চারটি হোটেল ভাড়া করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। চিকিৎসকদের আরামদায়ক হোটেলে রাখার চেয়েও বড় কথা তাঁদের পরিবারকে বাঁচানো। সম্প্রতি দিল্লির এক চিকিৎসকের পুরো পরিবারই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাই এরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকারগুলি।

করোনা আতঙ্ক ও লকডাউন যতদিন চলবে, ততদিন রোগীদের এই কষ্টেরও সুরাহা হওয়ার আশা নেই বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।