কলকাতা ফোর্ট উইলিয়ামে বিজয় উৎসব
১৬ ডিসেম্বর ২০১১ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কেন্দ্র বা ইস্টার্ন কম্যান্ড প্রতি বছরই ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবস উদযাপন করে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামের বিজয় স্মারক প্রাঙ্গনে৷ কিন্তু এবারের উৎসবের গুরুত্ব ছিল আলাদা, যেহেতু এই বছর ওই ঐতিহাসিক বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তি হল৷ যে কারণে ইস্টার্ন কম্যান্ডের বিশেষ আমন্ত্রণে শুক্রবার ফোর্ট উইলিয়ামে হাজির থাকলেন বাংলাদেশের ২২ জন মুক্তিযোদ্ধা, যাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন সেনা কর্নেল, বর্তমানে বাংলাদেশের ডেপুটি স্পিকার শওকত আলি এবং বাংলাদেশের বর্তমান জিওসি, মেজর জেনারেল মহম্মদ মাহফুজুর রহমান৷ এঁদেরই হাত ধরে আরও একবার ইতিহাসের মুখোমুখি দাঁড়াল সমসময়৷
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন লেফটনান্ট কর্নেল, মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন: ‘‘৪ নম্বর সেক্টরে আমরা সিলেটের কানাইঘাট দখল করি৷ তারপর ১৬ তারিখ আমরা সিলেট শহর শত্রুমুক্ত করি৷ পাকিস্তানিদের পরাজিত করি৷''
প্রাক্তন ভারতীয় সেনাপ্রধানদের মধ্যে এদিন ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটনান্ট জেনারেল জে এফ আর জ্যাকব, যাঁর চেহারা ভারত-বাংলাদেশে সুপরিচিত৷ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেস কোর্স ময়দানে পাকিস্তানের জেনারেল নিয়াজি যখন আত্মসমর্পণের চুক্তিতে সই করছেন, ভারতীয় সেনা জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার ঠিক পিছনেই যিনি দাঁড়িয়ে, তিনিই লেফটনান্ট জেনারেল জ্যাকব৷ ইতিহাসের অংশ? না, সেই গৌরব কখনই দাবি করতে চান না জ্যাকব৷ বললেন, কর্তব্য পালন করেছি মাত্র৷
বন্দুক হাতে নয়, কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহসী লড়াই করেছেন শব্দসৈনিক লায়লা হাসান, বাংলাদেশের নৃত্য জগতের যিনি উজ্জ্বল এক ব্যক্তিত্ব৷
মুক্তিযুদ্ধের আর একজন শব্দসৈনিক প্রখ্যাত অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম৷ তাঁর আক্ষেপ, দেশের এই গর্বোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা সেভাবে লেখা হল কই৷
শহীদ সহযোদ্ধাদের স্মারক বেদিতে এদিন পুষ্পার্ঘ অর্পণ করলেন দুই দেশের বীর সেনানীরা৷ কলকাতা ময়দানের সকালের বাতাস ভারি হয়ে উঠল সামরিক বিউগলের লাস্ট পোস্টের সুরে৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক