কলকাতায় জার্মান উৎসব
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১কার্যত কলকাতার নামী দুর্গাপুজো মানেই তাই পুজোমন্ডপের মধ্যে দিয়ে ক্রমাগত এগিয়ে চলা দর্শার্থীদের সারি৷
সম্ভবত এটাই আকৃষ্ট করেছিল জার্মান শিল্পী গ্রেগর শ্নাইডারকে, যিনি ভাস্কর্য হিসেবে গড়ে তোলেন নির্দিষ্ট নকশার এক একটি ঘর, যে ত্রিমাত্রিক শিল্পভাবনার মধ্যে দিয়ে হেঁটে বেড়াতে পারেন দর্শকরা৷
২০১০ সালে দুর্গাপুজোর সময় কলকাতায় বেড়াতে এসে বহু বিচিত্র আকারের এবং নকশার, বহুবর্ণের সব পুজোমন্ডপের মধ্যে দিয়ে উৎসবমুখর জনতার নিরন্তর স্রোত দেখে তাই স্বাভাবিকভাবেই উৎসাহিত হয়েছিলেন শ্নাইডার৷ একাত্ম বোধ করেছিলেন পুজোমন্ডপের অভিজ্ঞতা সঞ্জাত শিল্প-ভাবনার সঙ্গে৷ তার পর থেকেই, কলকাতায় জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মাক্সমুয়েলার ভবনের মধ্যস্থতায় শ্নাইডারের আলোচনা শুরু হয় দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত পুজো-উদ্যোক্তা একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের সঙ্গে৷ এই পুজোটি যেহেতু সাবেকি রীতিনীতি মেনেই হয়, তথাকথিত থিমের পুজোর চলতি হাওয়ায় যেহেতু এরা গা ভাসায়নি, তাই প্রথমে ক্লাব কর্তাদের কিছুটা সংশয় ছিল৷ কিন্তু পরে শারদীয় উৎসবের বৃহত্তর সামাজিক দিকটির কথা ভেবেই ওরা রাজি হন৷ জানালেন একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের সাম্মানিক সভাপতি, রাজনীতিক সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷
শ্নাইডার এই ইন্দো-জার্মান সাংস্কৃতিক প্রকল্পটির নাম দিয়েছেন – ইটস অল রাইট৷ জার্মানির যে গ্রামে শ্নাইডার জন্মেছেন এবং বড় হয়েছেন, যেখানে শিল্প এবং ভাস্কর্যে তাঁর হাতেখড়ি, সেই গ্রামের নাম রাইট৷ একডালিয়ার পুজোমন্ডপে সেই গ্রামের একটি ছবিই তুলে ধরছেন শ্নাইডার৷
ইন্দো-জার্মান মৈত্রীর ৬০ বছর উপলক্ষে যে আন্তর্দেশীয় সাংস্কৃতিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, এই পুজোমন্ডপকে তারই অংশ হিসেবে দেখছে মাক্সমুয়েলার ভবন কর্তৃপক্ষ৷ তারা এ নিয়ে এতটাই উৎসাহিত যে যেদিন এই মন্ডপের উদ্বোধন, সেদিন থেকেই কলকাতায় জার্মান উৎসবের সূচনা বলে মনে করছেন তাঁরা৷ বললেন বর্তমান পরিচালক ডঃ ভালডে৷
শিল্পী গ্রেগর শ্নাইডার জানিয়েছেন, এই সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অংশ হিসেবে এর পর কলকাতার একটি পুজোমন্ডপের মডেল জার্মানিতে নিয়ে যাবেন তিনি৷ সেখানে জার্মান শিল্পী এবং কারিগররা সেই মন্ডপটিকে বাস্তবে রূপ দেবেন৷ আদান-প্রদানের বৃত্তটি সম্পূর্ণ হবে৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: জাহিদুল হক