কান উৎসবের মরোক্কান ছবিতে ‘সহবাস ধর্মঘট’
২২ মে ২০১১রোমানিয়ার বংশোদ্ভূত ফরাসী পরিচালক রাদু মিহাইলিনুর এই ছবিটির নাম ‘দ্য সোর্স' যা প্রদর্শিত হয়েছে শনিবার৷ তুরস্কের একটি সত্য ঘটনার অবলম্বনে তৈরি এই ছবিটির ঘটনা হলো এমন, মরক্কোর একটি প্রত্যন্ত গ্রামের নারী লাইলা, যার স্বামী সামি সেখানকার স্কুলের শিক্ষক৷ কাছে ধারে কুয়ো না থাকায় গ্রামের অন্যসব নারীদের মত সেও প্রতিদিন অনেকটা পথ হেটে পানি নিয়ে আসে৷ অথচ গ্রামের সব শক্ত সমর্থ পুরুষরা দোকানে বসে আড্ডা দেয় আর চা খায়৷ কুসংস্কার আর গ্রাম্য মানসিকতার কারণে নারীদের কষ্ট তারা যেন টেরই পায় না৷ একদিন পানি আনতে গিয়ে গ্রামের এক সন্তান সম্ভবা নারী পিছলে পড়ে গেলে তার পেটের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়৷ এই ঘটনার পর প্রতিবাদী হয়ে ওঠে লাইলা৷
কিন্তু স্থানীয় ইমাম এবং মাতবররা বাধা হয়ে ওঠে লাইলার সামনে৷ শেষ পর্যন্ত লাইলা সহ গ্রামের নারীরা সিদ্ধান্ত নেয়, যতদিন পর্যন্ত স্বামীরা তাদের দাবি মানবে না ততদিন পর্যন্ত যৌন সম্পর্ক থেকে তারা বিরত থাকবে৷ এরপরই টনক নড়ে গ্রামের সব পুরুষদের৷
ছবিতে দেখানো হয়েছে, স্কুল শিক্ষক স্বামীর কাছেই লিখতে পড়তে শেখে লাইলা৷ স্বামী যেমন তাকে আরব্য রজনীর কাহিনী পড়তে শেখায়, তেমনি তার কাছ থেকেই কোরান শরিফ পড়তে শেখে লাইলা৷ স্থানীয় ইমামের সঙ্গে তর্কের সময় কোরান শরিফ থেকেই সে যুক্তি তুলে ধরে৷
‘দ্য সোর্স' ছবিটিতে তুলে ধরা হয়েছে, কীভাবে ধর্মীয় গোড়ামি ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে নারীদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে৷ ছবিটির ইহুদি পরিচালক মিহাইলিনু বলেন, ‘‘কোরান শরীফ এবং ইসলাম ধর্মে নারীদের অনেক অধিকার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কিছু মানুষ কোরান এবং হাদিসের ব্যখ্যার সময় অনেক কিছু লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাতে পুরুষদের হাতেই ক্ষমতাটা থেকে যায়৷''
ছবিটিতে লাইলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আলজেরিয়া বংশোদ্ভূত ফরাসী অভিনেত্রী লাইলা বাখতি৷ তিনি বলেন, এই ছবিটিতে নারী পুরুষকে মুখোমুখি দেখানো হয়নি৷ সমস্য হলো আমরা কখনো একে অপরের কথা শুনি না৷ এই ছবিটিতে সেই কথাই বলা হয়েছে৷''
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক