কারাবন্দিদের জন্য মুক্তি আনবে বিশ্বকাপ
৩ জানুয়ারি ২০১২বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে সবার আগে স্টেডিয়ামগুলোকে ঠিক করা জরুরি৷ ব্রাজিল সেই কাজে নেমে পড়েছে৷ কারাবন্দিদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে স্টেডিয়াম তৈরির কাজে৷ ২৬ বছর বয়স্ক থিয়াগো ফেরেইরা জানাল,‘‘আমার জীবন পাল্টে যাচ্ছে৷'' মাদক পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর থিয়াগোর কারাদণ্ড হয়৷ ব্রাজিলের বেলো হরিজন্টে সকার স্টেডিয়ামে বিভিন্ন ধরণের কাজে থিয়াগো সাহায্য করছে৷ নতুন এই কাজ প্রসঙ্গে সে আরো জানিয়েছে,‘‘এটা হল আমার কারামুক্ত হওয়ার দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় সুযোগ৷'' নতুন করে জীবন গড়ার এই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করতে চায় না থিয়াগো ফেরেইরা৷
বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে ব্রাজিল সরকারের সঙ্গে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ আর তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘স্টেডিয়াম তৈরি অথবা সংস্কারের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত কর্মীদের অন্তত পাঁচ শতাংশ কারাবন্দি নিয়োগ করতে হবে৷ এবং তা করতে হবে বারোটি শহরেই যে শহরগুলোতে খেলা আয়োজিত হবে৷'
কীভাবে এবং কিসের ওপর ভিত্তি করে কারাবন্দিদের বাছাই করা হবে তা নিয়ে দিনের পর দিন সমাজ কর্মী, আইনজীবী এবং মনস্তত্ববিদরা কাজ করেছেন৷
মিনাস গেরিয়াস হচ্ছে আরেক কারাবন্দি৷ সে যে কারাগার থেকে এসেছে সেখানে দেড় হাজার বন্দিদের মধ্য থেকে মাত্র ১৬ জনকে বেছে নেয়া হয়েছে৷ প্রতিদিন ভোর চারটায় তাকে ঘুম থেকে উঠতে হয়৷ সে কাজ করছে ৬৭ হাজার আসনের মিনেইরাও স্টেডিয়ামে৷ ২০১২ সালের মধ্যেই এর কাজ সম্পন্ন করতে হবে৷
প্রতিটি কারাবন্দির একটানা তিনদিন কাজ করার বদলে তাদের কারাবাস থেকে একদিন মকুব হবে৷ এভাবেই কমানো হবে তাদের কারাজীবন৷ ফেরেইরা আরো জানাল,‘‘আমরা যারা আধা কারাবন্দি হয়ে আছি আমাদের জন্য এটা হচ্ছে নিজেকে পুরোপুরি মুক্ত করার মোক্ষম এক সুযোগ৷ কারণ অপরাধীদের মুক্ত হওয়ার মাত্র দুটি পথ খোলা থাকে – সারাজীবন হুইল চেয়ারে বসে কাটানো অথবা মাটির নীচে ছয় ফুট গভীরে শুয়ে থাকা৷''
ফেরেইরা দুই বছর পাঁচ মাস ধরে বন্দি জীবন কাটাচ্ছে৷ তবে ফেরেইরাকে প্রতি মাসে বেতনও দেয়া হচ্ছে৷ মাসে আড়াইশো ইউরো৷ তা খুব বেশি নয় কিন্তু ফেরেইরা জানাল, এই টাকা সে তার স্ত্রীর হাতে তুলে দেয়৷
আরো বেশ কিছু আসামিকে সমাজে সুস্থভাবে ফিরে আসার সুযোগ দিচ্ছে ব্রাজিল সরকার৷ উপলক্ষ্য হল ২০১৩ সালের ফিফা কনফেডারেশন কাপ এবং ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ৷ দণ্ডিত অপরাধীদের সমাজের মূল স্রোতে আবার ফিরিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক