কালো পোশাকে ‘গোল্ডেন গ্লোব'
৮ জানুয়ারি ২০১৮রবিবার অ্যামেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসে অনুষ্ঠিত হয় পঁচাত্তরতম ‘গোল্ডেন গ্লোব' পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান৷ চলচ্চিত্র বিশ্বের অন্যতম পুরস্কার এটি, যেখানে শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার ছবি হিসেবে পুরস্কৃত হয় তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মান পরিচালক ফাতিহ আকিনের ‘ইন দ্য ফেড'৷ তবে পুরস্কার নয়, রবিবারের অনুষ্ঠানমঞ্চ আলোড়িত হলো নারী নিগ্রহের প্রতিবাদে৷
অ্যামেরিকার বিখ্যাত প্রযোজক সংস্থা হার্ভে ব্রাদার্স৷ এক সময় প্রতিষ্ঠানটি কিনে নিয়েছিল ডিজনি৷ পরবর্তীকালে হার্ভে ব্রাদার্স আরও একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে৷ অভিযোগ, নব্বইয়ের দশক থেকে একের পর এক নারী নিগ্রহের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিলেন হার্ভে ব্রাদার্সের অন্যতম হার্ভে উইনস্টাইন৷ ২০১৭ সালে ‘নিউ ইয়র্কার' পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, বব তাঁর ভাই হার্ভের নারী নিগ্রহের ঘটনা চাপা দেওয়ার জন্য কয়েক লক্ষ পাউন্ড দিয়েছিলেন ব্রিটেনের দুই মহিলাকে৷ ওই দুই মহিলাই হার্ভের নিগ্রহের শিকার৷
খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের চলচ্চিত্র কুশিলব এবং চলচ্চিত্রপ্রেমীরা প্রতিবাদে মুখর হন৷ শুধু তাই নয়, অন্যান্য প্রযোজকদের হাতে নিগৃহিতারাও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করেন৷ ‘নিউ ইয়র্কার'এর সেই রিপোর্টের পর প্রথম ‘গোল্ডেন গ্লোব'-এর মঞ্চে একত্রিত হন চলচ্চিত্রের কুশিলবেরা৷ সে কারণেই কালো পোশাক পরে তাঁরা প্রতিবাদ জানান৷ শুধু তাই নয়, তাঁদের প্রতিবাদে উঠে আসে আরও বিভিন্ন তথ্য৷ বিভিন্ন সময় নিগৃহিত হওয়ার কাহিনি৷ কেউ কেউ ‘মি টু' হ্যাশ ট্যাগও ব্যবহার করেন প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে৷
অষ্টমবার ‘গোল্ডেন গ্লোব' বিজেতা মেরিল স্ট্রিপ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্যের বিষয়টি এখন যথেষ্ট আলোচিত৷ সেই বৈষম্যই নারী নিগ্রহের জন্য দায়ী৷ সকলে একসঙ্গে কালো পোশাক পরে আমরা সেই বৈষম্যই তুলে ধরার চেষ্টা করছি৷''
‘অল দ্য মানি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড' ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কৃত হন মিশেল উইলিয়ামস৷ মঞ্চে তিনি সঙ্গে করে নিয়ে যান ‘মি টু' হ্যাশট্যাগের প্রণেতা তারানা বুর্কেকে৷
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে পুরস্কৃত করা হয় তুর্কি-জার্মান পরিচালক ফাতিহ আকিনকে৷ ‘ইন দ্য ফেড' ছবিতে আকিন বলেছেন এক তুর্কি পরিবারের গল্প৷ পরিবারটির ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে সন্ত্রাসবাদের কাহিনি৷ পরবর্তীকালে জার্মানিতে যাঁরা দক্ষিণপন্থিদের বোমা হামলার শিকার হন৷ কিন্তু জার্মান প্রশাসন বিষয়টিকে অন্যভাবে বিচার করে৷ তারা এর সঙ্গে মাদক ব্যবসার যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে৷ সেই ভুয়া অভিযোগের বিরুদ্ধে একা লড়াই চালিয়ে যান বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া কাটজা৷
শুধু ‘গোল্ডেন গ্লোব'-র মঞ্চেই নয়, সারা বিশ্বেই সমাদৃত হয়েছে ফাতিহ আকিনের এই ছবি৷ পুরস্কার পাওয়ার পর তা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে বলেই বিশ্বাস পরিচালকের৷
এসজে/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)