কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে কতটা সহায়তা করবে চীন?
১৩ আগস্ট ২০১৯পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি গত শুক্রবার বেইজিং সফর করে কাশ্মীর সংকট সমাধানে দেশটির সহায়তা কামনা করেছেন৷ ভারত সরকার জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের ‘বিশেষ মর্যাদা' বাতিলের সিদ্ধান্তের পর এই সফর করেন তিনি৷
কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের এই অবস্থান বদল, বিশেষ করে জম্মু-কাশ্মীর থেকে লাদাখকে আলাদা করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার যে সিদ্ধান্ত নতুন দিল্লি নিয়েছে, তার বিরোধিতা করেছে বেইজিং৷ চীন সরকারের মুখপাত্র ভারতের এই সিদ্ধান্তকে ‘অগ্রহণযোগ্য' আখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন যে, দেশটি কাশ্মীর অঞ্চল রক্ষায় পাকিস্তানের ‘আইনসম্মত অধিকার এবং আগ্রহকে' সহায়তা করবে৷
কোরেশি দাবি করেছেন, ইসলামাবাদ যদি কাশ্মীরের বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করে, তাহলে চীন তাতে ‘সম্পূর্ণ সহযোগিতার' প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷
কোরেশির সফরের পরপরই অবশ্য রবিবার তিন দিনের সফরে চীন গেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর৷ পূর্বনির্ধারিত এই সফর শুরুর পর সোমবার চীন জানিয়েছে, আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতি বজায় রাখতে নতুন দিল্লির কাছ থেকে ‘গঠনমূলক ভূমিকা' প্রত্যাশা করে বেইজিং৷
প্রসঙ্গত, বহুবছর ধরে ভারত এবং পাকিস্তান কাশ্মীরকে নিজেদের অঞ্চল বলে দাবি করে আসছে৷ তবে দুই দেশই কাশ্মীরের অংশবিশেষ নিয়ন্ত্রণ করছে৷ ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় থেকেই কাশ্মীর নিয়ে এই দুই প্রতিবেশী দেশের বিরোধ চলছে৷ বর্তমানে কাশ্মীরের ৪৫ শতাংশ ভারতের, ৩৫ শতাংশ পাকিস্তানের এবং বাকি বিশ শতাংশ চীনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে৷
বিশ্লেষকরা মনে করেন, আঞ্চলিক ইস্যুতে চীন ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তানের পক্ষ নিলেও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রক্ষার বিষয়টিও সেদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ৷ আর বর্তমানে চীন যে অবস্থায় রয়েছে, সেখান থেকে কাশ্মীর ইস্যুতে কঠোর কোনো উদ্যোগ নেয়াও দেশটির পক্ষে সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
নতুনদিল্লিভিত্তিক লেখক এবং বিদেশ নীতি বিশেষজ্ঞ নারায়ণী বসু এই বিষয়ে বলেন, ‘‘চীন এই মুহূর্তে বেশকিছু আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে কাজ করছে৷ ফলে দেশটির পক্ষে এখন শুধু কাশ্মীরের দিকে মনোযোগ দেয়ার সুযোগ নেই৷ এ কারণে উভয়পক্ষ কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি নিয়ে নানা কথা বললেও বাস্তবে তার কোনো ফল দেখা যাবে না৷''
চীনের অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে সেটা কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে আরো নিঃসঙ্গ করে ফেলবে৷ এখন অবধি দেশটি এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক তেমন কোনো সহায়তা পায়নি৷ বরং রাশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত নতুন দিল্লির উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে৷ পাকিস্তানের মিত্র হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবও ইসলামাবাদকে কোনো সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়নি৷
কুনাল পুরোহিত (মুম্বাই)/এআই