কাশ্মীর থেকে সরছে ১০ হাজার সেনা
২০ আগস্ট ২০২০কাশ্মীর উপত্যকা থেকে ১০ হাজার আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তবে ঠিক কী করাণে সেনা সরানো হচ্ছে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
গত বছর অগাস্ট মাসেজম্মু ও কাশ্মীরেরবিশেষ অধিকার আইন বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কিছু বিশেষ অধিকার পেত কাশ্মীর উপত্যকা। স্বাধীন সময় থেকে সেই আইন চলে আসছিল। বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার গত বছর তা বাতিল করার পরে বিপুল পরিমাণ সেনা এবং আধা সেনা মোতায়েন করা হয় কাশ্মীর উপত্যকায়। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, অশান্তি এড়াতেই ওই পরিমাণ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে কাশ্মীরে।
শুধু তাই নয়, কাশ্মীরের আরও বেশ কিছু নাগরিক অধিকার সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক দিকে ঘোষণা করা হয় লকডাউন, অন্য দিকে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। গণমাধ্যমের উপরেও বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়। যা নিয়ে গত এক বছর ধরে নানা স্তরে বিতর্ক চলছে।
কয়েক মাস হলো বন্ধ করে দেওয়া বিভিন্ন পরিষেবা ধীরে ধীরে চালু করা হচ্ছে। আপাতত দুইটি জেলায় ফোর জি ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হয়েছে। সরকারের দাবি, কাশ্মীর উপত্যকা এখন আগের চেয়ে স্বাভাবিক। বস্তুত সে কারণেই ১০ হাজার আধা সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সেনাদের কাশ্মীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সরকার জানিয়েছে, তাদের পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
গত কয়েক মাসে কাশ্মীরে একের পর এক সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কিছু পুলিশ এবং সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এত পরিমাণ সেনা কেন সরকার সরিয়ে নিচ্ছে তা নিয়ে কোনো কোনো মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু বিশেষজ্ঞের ধারণা, সরকার আরও বড় কোনো পরিকল্পনা করছে। সে কারণেই আপাতত আধা সেনাদের একটা বড় অংশ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
গত মে মাস থেকে লাদাখে ভারত-চীন সংঘাত শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, শীতে এই সংঘাত আরও তীব্র হবে। সেনা সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মীর এবং লাদাখ সীমান্তে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উপত্যকা থেকে ১০ হাজার সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার কারণ নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
তবে কাশ্মীরের মানুষের কাছে সরকারের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট আনন্দের। দীর্ঘ দিন ধরে কাশ্মীরের একাংশের মানুষের অভিযোগ, তাদের রাজ্যটিকে কার্যত পুলিশ স্টেটে পরিণত করা হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় সেনা টহল সাধারণ জনজীবনকে ব্যাহত করেছে। ১০ হাজার সেনা সরে গেলে জনজীবন কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
এসজি/জিএইচ (পিটিাই, এএনআই)