কাশ্মীরে ভারত-পাক সীমান্তে গুলির লড়াই
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০নতুন করে গুলির লড়াই শুরু হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে। ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর, রোববার ভোর থেকে লড়াই শুরু হয়েছে। ভারতীয় সেনার এক আধিকারিকের দাবি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের দিক থেকেই প্রথম গোলাগুলি চালানো শুরু হয়। তবে এখনো পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
সেনা সূত্র জানিয়েছে, রোববার ভোর পাঁচটা ৪৫ মিনিটে জম্মুর পুঞ্চ জেলার মানকোট সেক্টরে প্রথম গুলি চালাতে শুরু করে পাকিস্তানের সেনা। এর পর তারা মর্টারও ছোড়ে বলে অভিযোগ। পাল্টা আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। রোববার গভীর রাত পর্যন্ত গোলাগুলি চলেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত দুই তরফেই কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে কেন ফের লড়াই শুরু হলো, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, প্রতি বছরই শীতের ঠিক আগে পাকিস্তানের দিক থেকে ভারতে 'জঙ্গি' ঢোকানোর চেষ্টা করে পাক সেনা। সে কারণেই এক দিকে ভারতীয় সেনাকে গোলাগুলির যুদ্ধে ব্যস্ত রেখে অন্য দিক থেকে অনুপ্রবেশ ঘটানোর চেষ্টা হয়। বস্তুত, রোববার সকালে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল দিলবাগ সিং সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সীমান্তে একটি বড়সড় সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর ওই সুড়ঙ্গ পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ভারতে ঢোকার রাস্তা বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এর আগেও এ ধরনের সুড়ঙ্গের কথা জানিয়েছিল ভারত।
দিলবাগ জানিয়েছেন, ওই সুড়ঙ্গের পথ ধরেই কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। তবে এ বিষয়ে পাকিস্তানের তরফে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সুড়ঙ্গ এবং জঙ্গলের পথ ধরে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্যই সীমান্তের অন্য প্রান্তে গুলিগোলার লড়াই শুরু করেছে পাকিস্তান সেনা।
তবে বিশেষজ্ঞদের অন্য অংশের বক্তব্য, নতুন করে ভারত-পাক সীমান্তে এই গুলির লড়াইয়ের পিছনে আরও বড় বিষয় রয়েছে। মাসখানেক আগেই ভারতীয় গোয়েন্দারা এনএসএ অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছিলেন, লাদাখ সংঘাত কাশ্মীর সীমান্তেও নিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে চীন। এ বিষয়ে পাকিস্তানের সাহায্য চেয়েছে তারা। লাদাখের ভারত-পাক সীমান্তে পাকিস্তান সৈন্য বাড়িয়েছে বলে ভারতীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে পুঞ্চ সহ বেশ কিছু অঞ্চলেও পাকিস্তান সেনা বাড়িয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছিল। ভারত এই মুহূর্তে লাদাখের প্যাংগং অঞ্চলে সব চেয়ে বেশি সেনা মোতায়েন করেছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতেই পাকিস্তান নতুন করে কাশ্মীর সীমান্তে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এনডিটিভি)