কিডনি রোগের আদ্যোপান্ত
২৬ জুলাই ২০২২ফাইলে বন্দি থাকা? রেনে কাউফ কখনোই অফিস কেরানি হতে চাননি৷ তাই নার্স ছিলেন ২০ বছর৷ তবে তার কিডনিতে সমস্যা আছে৷ তাই কাজ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে তার জন্য৷
কিডনি রোগীরেনে কাউফ বলেন, ‘‘নার্সের কাজ করতে হলে আপনাকে শারীরিকভাবে সক্ষম ও সবসময় মনোযোগী থাকতে হবে৷ কিডনির কর্মক্ষমতা কমতে থাকলে সেগুলোও আর করা যায় না৷ কাজে দক্ষতা আর থাকে না৷ সহকর্মীদের আমাকে অনেক কাজে সাহায্য করতে হত৷''
ছয় বছর বয়সে কিডনিতে সিস্ট ধরা পড়ে রেনে কাউফের৷ তখন থেকেই ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছেন নিয়মিত৷ তবে অনেক বছর তিনি খেলাধুলা করতে পেরেছেন৷
কিডনি রোগের অনেক কারণ আছে৷ তবে কারণগুলো সবসময় ধরা পড়ে না৷
কাউফের মতো সিস্ট পাওয়া যায় মাত্র ৭ ভাগ কিডনি রোগীর৷ ১২ ভাগের কিডনি রোগ হয় অতিরিক্ত মাদক সেবনের কারণে৷ প্রদাহের কারণেও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷ তবে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের কারণ উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিস৷
কিডনি আক্রান্ত হয়েছেএটা বোঝা সহজ নয়, কারণ সাধারণত এতে ব্যাথা হয় না৷ মাইনৎস ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান ইউলিয়া ভাইনমান-মেনকে একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ৷
প্রফেসর ইউলিয়া বলেন, ‘‘কিডনি রোগের এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা৷ প্রাথমিক অবস্থায় কোন লক্ষণ ধরা পড়ে না৷ যখন ধরা পড়ে, ততক্ষণে সমস্যা অনেক গভীর হয়ে যায়৷ যেমন, ক্লান্তি, অবসাদ, কিংবা চুলকানি হতে পারে৷ হয়ত আপনার মূত্রের পরিমাণ কমে গেছে কিংবা রঙ বদলে গেছে৷ কিন্তু এমন কোনো লক্ষণ চোখে পড়বে না যে আপনার মনে হবে, আমার কিডনি রোগ হয়েছে৷''
নমুনা পরীক্ষায় সম্ভাব্য কিডনি রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে৷ মূত্রে প্রোটিনের উপস্থিতি একটি লক্ষণ হতে পারে৷ কিংবা মূত্র বা রক্ত পরীক্ষা করে ডায়বেটিস আছে কি না দেখা যেতে পারে, যা কিডনির ঝুঁকির কারণ৷
ইউলিয়া বলেন, ‘‘আমরা ঝুঁকি ফ্যাক্টরগুলো দেখি৷ রোগীর উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা, রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি কিনা, কিংবা রোগী এমন কোনো ওষুধ খাচ্ছেন কিনা, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর৷ কিংবা অটোইমিউন ডিজিজের মতো কোনো বংশগত রোগ আছে কি না, যা কিডনির ক্ষতি করতে পারে৷ এরপর আপনি এই রোগের চিকিৎসা করতে পারেন এবং কিডনির ক্ষতিরোধ করতে পারেন অথবা অন্তত এর ক্ষতি হবার গতি একেবারে শ্লথ করে দিতে পারেন৷
যদি কিডনি কর্মক্ষমতা একেবারে কমে যায় অথবা হারিয়ে যায়, তখন কেবল ডায়লাইসিস কাজ করে৷ রক্ত পরিষ্কার করতে হয়৷
রেনে কাউফের ক্ষেত্রে স্থায়ী উচ্চ রক্তচাপ এই রোগের প্রথম লক্ষণ৷ প্রথমে নেফ্রোলজিস্টের কাছে বাৎসরিক চেকআপ এবং এরপর ৩০ বছর বয়সে ডায়লাইসিস শুরু৷ এখন তো সপ্তাহে তিনবার করতে হয়৷
বংশগতভাবে পাওয়া রোগটি রেনে কাউফ হয়তো কোনভাবেই ঠেকাতে পারতেন না৷ কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করে কিডনি রোগ ঠেকানো যায়৷ সঙ্গে প্রয়োজন ডাক্তারের নিয়মিত চেকআপ৷ এই রোগনির্ণয়ের এটাই একমাত্র উপায়৷ এমনকি অল্প বয়সে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ নির্ণয় করা গেলে সঠিক উপায়ে চিকিৎসা সম্ভব৷
ক্রিস্টিন কাথ-লাউটারবাখ/জেডএ