ট্রাম্প-কিম বৈঠক বাতিল
২৪ মে ২০১৮উত্তর কোরিয়া তাদের পুঙ্গি-রি পারমাণবিক কেন্দ্রের তিনটি সুড়ঙ্গে বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে কেন্দ্রটি পরিদর্শনে যাওয়া বিদেশি সাংবাদিকরা জানিয়েছেন৷ তাঁরা জানান, পুঙ্গি-রি পারমাণবিক কেন্দ্রের পাহারাদার, সেনা ও কর্মীদের ব্যারাকের সামনেই সকালে ও বিকালে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী বিস্ফোরণের মাধ্যমে সুড়ঙ্গগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷
তবে এর কিছুক্ষণ পরই অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনের সাথে জুনের সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠকটি বাতিল করেন এক চিঠির মাধ্যমে৷
প্রসঙ্গত, এ পরীক্ষাকেন্দ্রেই ছয়টি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কোরিয়া৷ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানটাপ পর্বতের নীচে খোঁড়া কয়েকটি সুড়ঙ্গ নিয়েই এ কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছিল৷
উত্তর কোরিয়ার এ পদক্ষেপের ফলে আগামী১২ জুন সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও কিম জং উনের আলোচ্য বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা আরও প্রবল হওয়ার কথা থাকলেও, হয়েছে ঠিক উলটো৷
পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংস শুরুর কিছুক্ষণ পরেই অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, দুই দেশের বৈঠক নিয়ে কিম জং-উনের সাম্প্রতিক বিদ্বেষী মন্তব্যের কারণে তিনি জুনের বৈঠকটি করবেন না৷
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের এক চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, “সেখানে আপনার সঙ্গে মিলিত হতে আমি খুব উদগ্রীব ছিলাম। তবে দুঃখজনক, আপনার সাম্প্রতিক বিবৃতিতে তীব্র ক্ষোভ ও প্রকাশ্য শত্রুতা প্রকাশিত হওয়ায় আমি মনে করছি, এই সময়ে দীর্ঘ পরিকল্পিত এই বৈঠক সঠিক হবে না।”
এদিকে একদল রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, উত্তর কোরিয়ার এ সুড়ঙ্গ ধ্বংসের ব্যাপারটি আসলে একটা কৌশল৷ কেননা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি যথেষ্ট এগিয়েছে এবং এখন আর পরীক্ষার প্রয়োজন নেই৷ কেউ কেউ আবার বলছেন, ২০১৭ সালেই ঐ কেন্দ্রটিতে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার সময় কিছু অংশ ধসে পড়ে তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল৷
কেন্দ্রটি ধ্বংস করে ফেলা দেখতে নিরপেক্ষ কোনো অস্ত্র পরিদর্শক নয়, বরং বাছাই করা ২০ জনের মতো বিদেশি সাংবাদিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন৷
এ বছরের শুরুতেই পারমাণবিক পরীক্ষা ও কোরীয় উপত্যকায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয় উত্তর কোরিয়া৷
অবশ্য ১৯৯৪ সালেও একটি সমঝোতার আলোকে উত্তর কোরিয়া এ ধরনের ঘোষণা দিয়েছিল৷ পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা সফলভাবে সেখানে পর্যবেক্ষণ কাজও চালায়৷ কিন্তু ২০০২ সালে সেই সমঝোতা ভেস্তে যাওয়ার পর, পিয়ংইয়ং কেন্দ্রটি আবারো চালুর ঘোষণা দেয় এবং ২০০৫ সালে আত্মরক্ষার জন্য পরমাণু অস্ত্র উৎপাদন শুরু করে৷
এইচআই/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)