কিশোরদের আত্মহনন ঠেকানোর সাত দাওয়াই
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বে বছরে আট লাখ মানুষ বেছে নেয় স্বেচ্ছামৃত্যু৷ আর এই প্রবণতা বাড়ছে কিশোরদের মধ্যেও৷ তাই কৈশোরে আত্মহত্যা ঠেকানোর সাত উপায় দিলেন মনোরোগের অধ্যাপক ক্রিস্টিন হ্যাডফিল্ড৷
মৃত্যু নিয়ে আলাপ
‘‘আমি তোমার ঝামেলা হয়ে থাকতে চাই না’’ বা ‘‘আমি আত্মহত্যা করবো’’--মজার ছলেও যদি কোনো কিশোর এসব কথা বলে, সেটা গুরুত্ব দিয়ে নিতে হবে৷ তাঁর ওপর কৌশলে দৃষ্টি রাখতে হবে৷ অনেক সময় মুখে না বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এমন কথা লিখতে পারে কিশোররা৷ সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে৷
বিধ্বংসী আচরণ
কিশোর বয়সে রাগ এক-আধটু হয়েই থাকে৷ কিন্তু রেগে গিয়ে নিজের ক্ষতি করতে চাওয়ার অর্থ হলো, আত্মহত্যা প্রবণতা দানা বাঁধতে শুরু করা৷ অভিভাবকদের সতর্ক হতে হবে৷ খেয়াল রাখতে হবে, অতিমাত্রায় ড্রাগ আর অ্যালকোহলে সেবনে কিশোরটি জড়িয়ে পড়ছে কি না৷
সমাজবিমুখতা
একা থাকা পরিণত বয়সেও কষ্টের৷ তাই কৈশোরে পরিবার ও বন্ধু থেকে আলাদা হয়ে থাকার মানসিকতাকে আত্মহত্যার কারণ বলছেন বিশ্লেষকরা৷ বন্ধুবান্ধব, ভাই-বোন নিয়ে যারা সামাজিক সম্পর্কে জড়িয়ে থাকে, মানসিক যন্ত্রণায় ভোগার সুযোগ তাঁদের কম৷ তাই বাবা-মাসহ পরিবার পরিজনদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা খুব জরুরি৷ কোনো কিশোর যাতে নিজেকে একা মনে না করে৷
ফাঁদে পা অথবা একরাশ হতাশা
কৈশোরের উচ্ছ্বল দিনগুলোতে হতাশা কিংবা কোনো ভুলে পা দেয়া উস্কে দিতে পারে আত্মহত্যার চেষ্টাকে৷ তাই কিশোর মনের চিন্তাটা শুনতে হবে অভিভাবকদের৷ সন্তান কি বলতে চায় তা শুনতে হবে৷ কিছু বলতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে, তাহলে অভয় দিয়ে, ভালোবেসে সেই কথাটা শুনে নিন৷
অভ্যাসে বদল
কিশোর বয়সে নিত্যদিনের জীবনে হুট করে পরিবর্তন দেখা গেলে তাকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই৷ মনে রাখতে হবে, এটা হতাশার লক্ষণ৷ বাবা-মা-কে বুঝে নিতে হবে, তাঁদের আদরের সন্তান কোনো একটা সমস্যায় ভুগছে৷ দিনে তিন থেকে চার ঘণ্টা ঘুম মানে আত্মহত্যা প্রবণতা৷ আর ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে ঘুমানো কিন্তু বিষণ্ণতা৷ সচেতন থাকুন৷
প্রিয় জিনিসের প্রতি অনীহা
কোনো কারণ ছাড়া প্রিয় ক্রিকেট ব্যাট ছুঁড়ে ফেললো, আব্দারের পর আব্দার করে কেনা হাতঘড়িটার দিকে উদাসীন- আপনার সন্তানের মধ্যে এমন আচরণ দেখলে সতর্ক হয়ে যান৷ মনে রাখবেন, নিজের ব্যবহারের জিনিস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া মানে, তার মাথায় কিছু একটা চলছে৷
অকারণ মেজাজ দেখানো
কৈশোরে ক্ষণে ক্ষণে মন পালটানো নতুন কিছু নয়৷ তারপরেও সতর্ক থাকতে হবে৷ পরিবারের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা আছে কিনা তা জানতে হবে৷ সবমিলিয়ে কৈশোরের উচ্ছ্বলতায় সন্তানও যেন উচ্ছ্বল থাকে, অভিভাবককে হতে হবে সবচেয়ে কাছের বন্ধু৷