কিয়েভ-সহ গোটা ইউক্রেনে রাশিয়ার ড্রোন হামলা
৩ জানুয়ারি ২০২৪মঙ্গলবার একের পর এক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রাজধানী কিয়েভ, উত্তর-পূর্বের শহর খারকিভ-সহ একাধিক অঞ্চলে এই হামলা চলেছে। ঘটনায় এখনো পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকজন আহত। রাজধানীর সবচেয়ে জনবহুল এলাকাতেও বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখান থেকে একটি রাশিয়ার বোমারু ড্রোন উদ্ধার হয়েছে। ওই ড্রোনের থেকে একটি বাড়িতে আগুন লেগে গেছে।
ইউক্রেনের সেনা জানিয়েছে, রাশিয়ার নয়টি টুপোলেভ টিইউ-৯৫এমএস বোমারু বিমান নিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। গত ডিসেম্বরে শেষ এই বিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। সেবারও গোটা ইউক্রেনজুড়ে আক্রমণ চালিয়েছিল রাশিয়া। ঘটনায় ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ঘটনার পর একটি ভিডিও বিবৃতি দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, 'আরো একবার সারা রাত ধরে আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। বন্ধু দেশগুলির কাছে আরো সামরিক সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি।' জেলেনস্কি জানিয়েছেন, অন্তত ৭০টি মিসাইল ধ্বংস করা হয়েছে। এরমধ্যে ৬০টি মিসাইল কিয়েভের দিকে যাচ্ছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার মাত্রা অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। সাম্প্রতিক আক্রমণ তারই প্রতিফলন। বেসামরিক এলাকা, গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো লক্ষ্য করে এই আক্রমণ চালানো হচ্ছে।
বিশ্বের সমস্ত দেশের কাছে কুলেবার বার্তা, 'আমাদের আরো উন্নত অস্ত্রের প্রয়োজন। ৩০০ কিলোমিটারের লংরে়ঞ্জ মিসাইল, উন্নত ড্রোন-- সমস্ত প্রয়োজন। দ্রুত এই সাহায্য পাঠানো হোক কিয়েভে।' একইসঙ্গে রাশিয়ার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত বা ফ্রিজ করার আহ্বান জানিয়েছেন কুলেবা। জানিয়েছেন, পৃথিবীর সমস্ত দেশ থেকে রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হোক।
তুরস্কের পদক্ষেপ
এদিকে ইউক্রেনকে দেয়া যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজ আটকে দিয়েছেতুরস্ক। যুক্তরাজ্য দুইটি মাইনহান্টার যুদ্ধজাহাজ দিয়েছিল ইউক্রেনকে। সেই জাহাজ তুরস্ক হয়ে কৃষ্ণ সাগরে ঢোকার চেষ্টা করছিল। কিন্তু তুরস্ক জাহাজ দুইটি কৃষ্ণসাগরে ঢুকতে দেয়নি। ১৯৩৬ সালে যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে যুদ্ধ চলাকালীন কোনো যুদ্ধ জাহাজ কৃষ্ণসাগরে ঢুকতে দেয়ার কথা নয়। যুদ্ধরত দুই দেশের কাছেই যাতে কোনো যুদ্ধজাহাজ পৌঁছাতে না পারে, সেই চুক্তি হয়েছিল ওই কনভেনশনে। ফলে ইউক্রেনের কাছেও জাহাজ যেতে পারবে না।
তুরস্কের এই পদক্ষেপে স্বাভাবিকভাবেই খুশি নয় ইউক্রেন। যুক্তরাজ্যও এনিয়ে তুরস্কের সঙ্গে কথা বলেছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত তুরস্ক ওই জাহাজ ছাড়তে রাজি হয়নি।
জেলেনস্কি-সুনাক আলোচনা
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে জেলেনস্কির। সুনাক জেলেনস্কিকে আরো সামরিক সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সুনাক ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মিসাইল এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)