কিয়েভের কাছাকাছি রাশিয়ার সেনারা
১২ মার্চ ২০২২তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের মাঝেই হামলা অব্যহত রেখেছে রাশিয়া৷ সেনাদের বেশ কয়েকটি বহর রাজধানীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শনিবার রাতে ইউক্রেনের খারকিভ, সুমি ও মারিউপোলসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া৷
চলমান পরিস্থিতিকে ‘সন্ধিক্ষণ' বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি৷
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাদ্যমে বলা হয়, রাজধানী কিয়েভের উত্তরাঞ্চলে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর একটি বড় বহর দেখা গেছে৷ ইউক্রেনের পালটা হামলায় নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এমন বহরকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের৷
সংবাদমাদ্যমগুলো জানায়, শনিবার ভোররাতে রাশিয়ান সৈন্যদের কিয়েভ অভিমূখে অভিযান জোরদার করে৷ সেসময় রাজধানীর আশেপাশের বিভিন্ন স্থাপনায় রাশিয়ান সেনাদের গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে৷
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার স্থানীয় সময় ভোররাতে কিইভের উত্তরপূর্বে ব্রোভারি জেলায় রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণে হিমায়িত পণ্যের একটি গুদামে আগুন লেগে যায়৷
তাছাড়া রাজধানীর দক্ষিণে অবস্থিত একটি ইউক্রেনের একটি সামরিক স্থাপনায়ও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া৷
তাছাড়া দেশটির বন্দরনগরী মারিউপলের একটি প্রাচীন মসজিদেও হামলা চালায় রাশিয়ান সেনারা৷ মসজিদটিতে শিশুসহ প্রায় ৮০ জন সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে৷
মেয়রকে অপহরণের অভিযোগ
তার আগে ইউক্রেনের মেলিটোপোল শহরের মেয়রকে রাশিয়ার সেনারা অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের৷
মেয়রের মুক্তির দাবি জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘‘মেয়রের অপহরণের ঘটনায় রাশিয়ার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে৷ আর এটি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয় বরং একটি জনগোষ্ঠির উপর চালানো অপরাধ৷ এটি গণতন্ত্রের উপর চালানো অপরাধ৷''
উল্লেখ্য ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের এই শহরটি হামলা শুরুর প্রথম দিকেই দখলে নেয় রুশ সেনারা৷
যুদ্ধবিরতির আহ্বান
এদিকে রাশিয়ার হামলার পর বিভিন্ন শহর ও গ্রামাঞ্চলে আটকে পড়া সাধারণ মানুষকে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন৷
দেশটির রাজধানী কিয়েভ, মারিউপোল, সুমিসহ অন্যান্য শহরগুলো থেকে সাধারণ মানুষকে বেরিয়ে যাওয়া সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক৷
শনিবার মারিউপলে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সেখানকার সাধারণ মানুষকে বেরিয়ে যেতে করিডোর তৈরি করার কথা রয়েছে৷
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক বলেন, ‘‘আমি আশা করি মানবিক করিডোরগুলো খুলে দেওয়া হবে৷ রাশিয়ার সৈন্যরা যুদ্ধবিরতি মেনে সাধারণ মানুষকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেবে৷’’
‘ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত'
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর একে একে দেশটির বিভিন্ন শহরের অবরোধ ও দখল করে রাশিয়ান সেনারা৷ শনিবার ভোররাতের পর রাশিয়ান স্থলবাহিনী রাজধানী কিয়েভের খুব কাছাকাছি চলে আসে৷
রাজধানীর খুব কাছে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর উপস্থিতির প্রেক্ষিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘‘ইউক্রেন ইতিমধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছে৷’’
আরআর/জেডএ (এএফপি, এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)