কুমারী, কিন্তু গর্ভবতী!
১৯ ডিসেম্বর ২০১৩এক-দুই বছর নয়, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ৭,৮৭০ নারীর উপর গবেষণা চালিয়েছেন মার্কিন গবেষকরা৷ ১৯৯৫ সালে গবেষণার শুরু, যখন এসব নারীদের বয়স ছিল ১২ থেকে ১৮ বছর৷ ঐ নারীদের মধ্যে ৪৫ জন জানিয়েছেন তাঁরা কুমারী, কিন্তু গর্ভবতী হয়েছেন৷ অর্থাৎ তাঁরা যোনী সঙ্গম না করেও গর্ভধারণ করেছেন৷ এই নারীরা গবেষণায় অংশ নেয়া মোট নারীদের ০.৫ ভাগ৷
তাঁদের সবাই জানিয়েছে, ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ পদ্ধতিতে তাঁরা কেউ গর্ভবতী হননি৷ ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল বিএমজে মঙ্গলবার তাদের ক্রিসমাস প্রকাশনায় এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে৷ যেখানে গবেষকরা লিখেছেন, এই ৪৫ জনের মধ্যে নানাভাবে গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে বা ঘটেছে৷
বয়ঃসন্ধি থেকে প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যকালীন সময়ের চিত্রই উপস্থাপন করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে – যা যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক এবং ধর্মীয় ভাবধারাকেও তুলে ধরেছে৷ এই গবেষণায় কিশোরী ও তরুণীরা তাঁদের যোনি সঙ্গম, গর্ভবতী হওয়া এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে নানা তথ্য দিয়েছেন৷ এই ১৪ বছর ধরেই তাঁরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন অনলাইনে৷
তাঁদের বয়স এবং ধর্মের প্রতি অনুরাগও রেকর্ড করা হয়েছিল৷ প্রত্যেকের বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যৌন সম্পর্ক এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে তাঁরা মেয়েদের সাথে কতটা আলোচনা করেছে? এমনকি যেসব স্কুলে তারা পড়েছেন, সেসসব স্কুলের পরিচালকদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, পাঠ্যসূচিতে যৌন শিক্ষা রাখা হয়েছে কিনা?
গবেষণায় অংশ নেয়া নারীদের এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৩১ ভাগ গির্জায় গিয়ে শপথ নিয়েছিলেন৷ রক্ষণশীল খ্রিস্টান গির্জাগুলোতে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের অনুমোদন দেয়া হয় না৷ এর বিকল্প হিসেবে ঐ শপথ নেয়া যায়৷
দেখা গেছে, কুমারী নয়, কিন্তু বিয়ে করেননি অর্থাৎ ‘নন-ভার্জিন' এমন ১৫ ভাগ নারী যারা গর্ভধারণ করেছেন, তাঁরা গির্জায় এ ধরনের শপথ নিয়েছিলেন৷ গবেষণায় দেখা গেছে কুমারী মায়েদের গড় বয়স ১৯.৩ বছর আর ‘নন-ভার্জিন' মায়েদের গড় বয়স ২১.৭ বছর৷
নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োস্ট্যাটিক্সের অধ্যাপক অ্যামি হেরিং, যিনি এই গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক, তিনি এএফপিকে বলেছেন, তাঁরা সরাসরি কোনো প্রশ্ন রাখেননি যে তাঁরা কুমারী অবস্থায় গর্ভধারণ করেছেন কিনা, বরং এমন অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর থেকে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন৷তবে এসব প্রশ্ন অনেকের কাছে পরিষ্কার না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং অনেকে তথ্য গোপন করার জন্য যোনী সঙ্গমের ব্যাপারটি এড়িয়ে গিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন হেরিং৷
গবেষণার ফলে যৌন শিক্ষা, এ বিষয়ে সচেতনতা এবং যৌন জীবন সম্পর্কে সঠিক তথ্য কিভাবে পাওয়া সম্ভব সে বিষয়গুলো বেরিয়ে এসেছে৷
এপিবি/জেডএইচ (এএফপি/রয়টার্স)