অস্ত্র দিতে পারে জার্মানি
২৬ আগস্ট ২০১৪বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে জার্মানির পক্ষে যখন শান্তির বাণী উচ্চারণ করা কঠিন হয়ে উঠছিল, ঠিক সে সময়েই ইরাকের উত্তরে কুর্দি বাহিনীকে সামরিক সাহায্য দেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে৷ ক'দিন আগেই অস্ত্র রপ্তানির বিধিনিয়ম বেশ কড়াকড়ি করা হয়েছে৷ তাতে যে ব্যতিক্রমের কথা বলা হয়েছে, এত দ্রুত তা ঘটবে বলে কেউ ভাবতে পারেনি৷
কট্টরপন্থি আইসিস জঙ্গিদের রুখতে কুর্দিদের সহায়তা করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ইরাকের উত্তরে গণহত্যা এড়ানো জার্মানির নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি৷ তবে এর সঙ্গে ঝুঁকিও জড়িয়ে রয়েছে বলে স্বীকার করেন ম্যার্কেল৷ সেই অস্ত্র শেষ পর্যন্ত কার হাতে পড়বে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে অনেক মহল৷ উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহে সরকার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে৷
১৯৯০ সালে দুই জার্মানির পুনরেকত্রিকরণের আগে বিদেশের মাটিতে কোনো ধরনের জার্মান সামরিক কার্যকলাপ কল্পনাও করা যেত না৷ তারপর থেকে ধাপে ধাপে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে৷ তবে শুধু সরকার একা নয়, সংসদেও বৃহত্তর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই প্রতিটি ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তা সত্ত্বেও জনসাধারণের মনে এ বিষয়ে সংশয় রয়ে গেছে৷ যেমন একটি সাম্প্রতিক জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৬৩ শতাংশ মানুষ কুর্দিদের অস্ত্র সরবরাহের বিরোধিতা করছেন৷
আইসিস জঙ্গিদের তৎপরতার আলোকে গোটা অঞ্চল সম্পর্কে জার্মানি তথা পশ্চিমা জগতের অবস্থান পুনর্মূল্যায়নের জন্য চাপ বাড়ছে৷ যেমন সিরিয়ার কোণঠাসা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে একটা বোঝাপড়ায় আসা প্রয়োজন বলে মনে করছে অনেক মহল৷ কারণ শুধু ইরাকে আইসিস জঙ্গিদের দমন করাই যথেষ্ট নয়৷ সোমবার জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র অবশ্য এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, যে আসাদ প্রশাসন গত সাড়ে তিন বছর ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে লিপ্ত, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা সম্ভব নয়৷ এই সময়কালে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করিয়ে দেন তিনি৷
সিরিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলির সাংবাদিক সহ একের পর এক ব্যক্তির অপহরণ নিয়েও নতুন বিড়ম্বনা দেখা যাচ্ছে৷ অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা জঙ্গিদের অর্থের বড় উৎস হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ এই অবস্থায় জার্মান সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনো অবস্থায় সরকারি কোষাগার থেকে মুক্তিপণের অর্থ দেওয়া হবে না৷ সম্প্রতি সিরিয়ায় অপহরণকারীদের কাছ থেকে এক জার্মান নাগরিকের মুক্তির পর এই প্রশ্ন উঠেছিল৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)