অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে আলোচনা
১৪ জুন ২০১৬সম্প্রতি ঢাকায় এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘এখন সময় হয়েছে আমাদের চাষী কিষাণরা, তাদেরও এখন ট্যাক্স দিতে হবে৷ কারণ এখন ‘বেশ বড় কৃষক' অনেক হয়ে গেছে৷ এলাকা বেশি হয় নাই, কিন্তু এলাকার প্রোডাক্টিভিটি এত বেড়েছে যে তাদের ওপর করারোপ করা যায়৷ যদিও এখন পর্যন্ত তারা কর অব্যাহতি পায়৷ তবে তাদের আয়ের ওপর করারোপ করতে হবে, পুরো উৎপাদনের ওপর নয়৷''
বর্তমানে চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশাজীবীদের মধ্যে যাঁদের বাৎসরিক আয় আড়াই লক্ষ টাকার বেশি, তাঁদের কর দিতে হয়৷ কৃষকদের ক্ষেত্রে তাঁদের আয়ের উপর করারোপের কথা বললেও সেই সীমা কতখানি হবে, সেটি বলেননি অর্থমন্ত্রী৷
তবে কৃষকদের ট্যাক্স দিতে হবে জেনে সামাজিক মাধ্যমে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন অনেকে৷ অর্থমন্ত্রীর মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন রবিন আহসান৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘‘যে কৃষক ফসলের দাম পায় না, তাকেও ট্যাক্স দিতে হবে!!! (আওয়ামী লীগ নীলকর ইংরেজ সরকার হতে যাচ্ছে)৷''
শাহীন হোসেনও একই ধরণের মন্তব্য করেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘এমনিতেই কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যয্যমূল্য পায় না, তার উপর আবার কর আরোপ৷''
মো. সুমন অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘হাস্যকর' মনে করছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘যেখানে ফসল উৎপাদন করে প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান হয়, সেখানে কৃষক দেবে ভ্যাট এমন ঘোষণা আমার কাছে হাস্যকর মনে হচ্ছে৷'' অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘...দুর্নীতি করার মতো টাকা বোধহয় আপনাদের তহবিলে ঘাটতি হয়েছে যা পূরণ করতে কৃষকদের ভ্যাট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন৷ নাকি সরকারি কর্মচারীদের বেতন আরেকগুণ বাড়াতে চাচ্ছেন?''
এদিকে, রতন কুমার মজুমদার মনে করছেন, অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যকে অনেকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছেন৷ কৃষক হলেই যে তাঁকে কর দিতে হবে এমন মন্তব্য অর্থমন্ত্রী করেননি বলে ফেসবুকে লিখেছেন তিনি৷ দেশের সবাইকে কর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে রতন কুমার মজুমদার বলেন, ‘‘পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের নাগরিক ট্যাক্স দিয়ে গর্ববোধ করে৷ দেশের উন্নয়নে তাঁদের অবদান রাখার জন্যই স্বপ্রণোদিত হয়ে ট্যাক্স দেয়৷''
ইফতেখার মোহাম্মদের প্রশ্ন, ‘‘কৃষক যদি করমুক্ত আয় সীমার উপরে ওঠে, কেন সে কর দেবে না?''
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী