কে হবেন ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?
১০ জুন ২০১৯ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হবার দৌড়ে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করছেন৷ মনোনয়নের জন্য প্রত্যেক প্রার্থীকে আটজন সংসদ সদস্যের সমর্থনের প্রমাণ দিতে হবে৷ শুক্রবার টোরি দলের নেতা হিসেবে টেরেসা মে পদত্যাগ করার পর দলের একাধিক নেতা সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে এগিয়ে এসেছেন৷ এই লক্ষ্যে যিনি সফল হবেন, তিনিই ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন৷
সোমবার স্থানীয় সময় বিকাল পাঁচটার মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে হবে৷ আপাতত ১১ জন সংসদ সদস্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন৷ ২০শে জুলাইয়ের মধ্যে বাকিদের সরিয়ে সেরা দুই প্রার্থীর নাম স্থির হয়ে যাবার কথা৷ টোরি দলের নতুন নেতা তথা ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, জুলাই মাসের শেষেই তা স্থির হয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে ক্ষমতার এই লড়াইয়ে যারই জয় হোক না কেন, ব্রেক্সিট কার্যকর করার কঠিন দায়িত্ব তাঁকে নিতে হবে৷
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এখনো জনপ্রিয়তার দৌড়ে বাকিদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন৷ তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ হতে পারেন পরিবেশমন্ত্রী মাইকেল গোভ ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট৷ এই দুজন সোমবারই নিজেদের প্রচার অভিযান শুরু করছেন৷ গোভ অবশ্য সপ্তাহান্তে স্বীকার করেছেন, যে ২০ বছর আগে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করার সময় তিনি কোকেন সেবন করেছেন৷ ফলে তাঁর অবস্থান কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে৷
ব্রেক্সিট কার্যকরকরার প্রশ্নে তিন প্রার্থীই নিজেদের যোগ্য হিসেবে তুলে ধরছেন৷ তিনজনেই মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দরকষাকষি করে ব্রিটেনের জন্য আরও সুবিধাজনক শর্তে চুক্তি আদায় করতে পারবেন৷ ইইউ অবশ্য এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে৷ একাধিক ইইউ নেতা জানিয়েছেন ৩১শে অক্টোবরের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ব্রিটেনের সংসদ বর্তমান ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন না করলে ব্রিটেনকে চুক্তি ছাড়াই ইইউ ত্যাগ করতে হবে৷ এই মেয়াদ আরও বাড়ানোর তীব্র বিরোধিতা করছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ-সহ একাধিক নেতা৷
এই বাস্তবতা উপেক্ষা করে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীরা ইইউ-র বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিচ্ছেন৷ বরিস জনসন তুরুপের তাস হিসেবে ইইউ-র কাছে সদস্য হিসেবে বকেয়া অর্থ আটকে রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ব্রিটেনকে প্রায় তিন হাজার ৯০০ কোটি পাউন্ড দিতে হবে৷ বলা বাহুল্য, ইইউ এমন হুমকিকে ভাল চোখে দেখছে না৷ বকেয়া অর্থ না দিলে ব্রিটেন ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে আশঙ্কা বাড়ছে৷
প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের পথ বেছে নিতে চান বরিস জনসন৷ এই মুহূর্তে তিনিই সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হলেও টোরি দলের ইতিহাসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেতৃত্বের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থীর পরাজয় ঘটেছে৷
জেরেমি হান্ট নিজের কূটনৈতিক পারদর্শিতা দেখাতে দাবি করেছেন, যে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল নাকি নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রেক্সিট নিয়ে নতুন করে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন৷ তিনিই এমন আলোচনায় ব্রিটেনের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবেন বলে মনে করেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)