1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেজরিওয়াল পারেন, মমতা পারেন না!

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
৪ ডিসেম্বর ২০১৯

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে রাজধানী দিল্লির কাছে গোহারা হেরে গেল কলকাতা৷ বলা যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছে হেরে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

https://p.dw.com/p/3UDq8
দিল্লিতে মশা মারার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে (ফাইল ছবি)ছবি: picture alliance/dpa/Str.

গত দু-তিন বছর ধরে দিল্লিতে ডেঙ্গু ছিল বিভীষিকা৷ ডেঙ্গুরোগীদের ভিড়ে উপচে পড়ত হাসপাতালগুলি৷ রাজধানীতে এমন কোনো এলাকা ছিল না, যেখানে ডেঙ্গু থাবা বসায়নি৷ কিন্তু চলতি বছরে ছবিটা পুরোপুরি বদলে গেছে৷ এ বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তুলনায় অনেক কম৷ সবচেয়ে বড় কথা,  একজনেরও মৃত্যু হয়নি৷ ২০১৫-তে দিল্লিতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার, মারা গিয়েছিলেন ৬০ জন৷ সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে দিল্লি৷ আম আদমি পার্টি (আপ) নেতাদের দাবি, সাফল্যর পিছনে একজনই— অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে অভিযানকে একটা গণআন্দোলনে পরিণত করেছিলেন কেজরিওয়াল৷ তাঁর আবেদন ছিল, ১০ সপ্তাহ, ১০ টার সময়, দশ মিনিট সময় ডেঙ্গুকে থামাতে খরচ করুন৷ বাড়ি ও আশপাশের এলাকা পরিস্কার রাখুন৷ সেটাই অন্দোলনের চেহারা নিয়েছে৷ প্রতি সপ্তাহে একাধিকবার নালায় মশা মারার তেল দেওয়া হয়েছে৷ ফগিং করা হয়েছে৷ তার ফলও হাতেনাতে পেয়েছেন দিল্লিবাসী৷

দিল্লিতে ডেঙ্গুকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে তা কেজরিওয়ালের কট্টরবিরোধী বিজেপি নেতারাও স্বীকার করছেন৷ তবে তাঁরা পুরো কৃতিত্বটা কেজরিওয়ালকে দিতে চান না৷ তাঁদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বচ্ছ্ব ভারত অভিযানে প্রচুর কাজ হয়েছে, বিজেপি শাসিত পুরসভাগুলিও উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে৷

কৃতিত্ব কার তা নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু দিল্লিতে ডেঙ্গু যে নিয়ন্ত্রণে, তা নিয়ে আপ ও বিজেপি-র নেতাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই৷

এটাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ব্যর্থতা হিসাবে দেখা ঠিক হবে না: মানস ভুঁইঞা

কিন্তু কলকাতার ক্ষেত্রে বা বলা ভালো, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ছবিটা বদলে যাচ্ছে৷ গত মঙ্গলবারই ডেঙ্গুতে তিনজন মারা গেছেন৷ তার মধ্যে দুজন জেলার৷ একজন কলকাতার৷ টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী, ২৪ অক্টোবরের হিসাব ছিল, ২৩ হাজার লোক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত৷ নভেম্বরের ১০ তারিখে সংখ্যাটা ৪৪ হাজার হয়েছে৷ মৃত্যুর সংখ্যাটাও ঠিকভাবে জানা যাচ্ছে না৷ কারণ, অভিযোগ, ডেঙ্গুতে মৃত্যু হলেও ডেথ সার্টিফিকেটে অজানা জ্বরের কথা বলা হচ্ছে, মাল্টি অর্গান ফেলিওরের কথা বলা হচ্ছে৷

তৃণমূল নেতারাও স্বীকার করছেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ আছে৷ রাজ্যসভার সাংসদ ও পেশায় চিকিৎসক মানস ভুঁইঞার মতে, বসিরহাট, ব্যারাকপুর ও দমদমের কাছের এলাকায় বেশি করে ডেঙ্গু হচ্ছে৷ তবে এটাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ব্যর্থতা হিসাবে দেখা ঠিক হবে না৷ আর সরকার ডেঙ্গুতে মৃত্যুর খবরও চাপছে না৷ কিছু ডাক্তার হয়তো ওরকম রিপোর্ট দিচ্ছেন৷ দায়টা তিনি চিকিৎসকদের উপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন৷

তা হলে, ঘটনাটা কী দাঁড়াল? দিল্লি পারল, বাংলা ব্যর্থ? বাংলায় এখনও ডেঙ্গুতে মানুষ মারা যাচ্ছে৷ রাজনৈতিক তরজা চলছে৷ অনেকেই বলছেন, মশার তান্ডবকে বন্ধ করার কাজটা করতে পারেনি তৃণমূল সরকার৷ প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক আবহে বিজেপিবিরোধিতায় মমতা-কেজরিওয়াল যে বন্ধুত্ব দেখাচ্ছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে তা দেখাচ্ছেন না কেন?