1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেন সমানে পথ দুর্ঘটনা বাড়ছে কলকাতায়?

৩ জানুয়ারি ২০২৩

বেড়েই চলেছে পথ দুর্ঘটনা। বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উপলক্ষে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেড়েছে কলকাতা-সহ শহরতলিতে।

https://p.dw.com/p/4LflQ
ছবি: Payel Samanta/DW

বছরের শুরুতেই একটি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিস্তর হইচই হচ্ছে। পয়লা জানুয়ারি নিউ টাউনে মৃত্যু হয়েছে এক ছাত্রের। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন শাকিল আহমেদ। ২৩ বছরের শাকিলকে বেপরোয়া গাড়ি ধাক্কা মেরে চলে যায়। হাসপাতালে মারা যান তিনি।

দোষীর গ্রেপ্তারির দাবিতে সোমবার পথে নামেন আলিয়ার পড়ুয়ারা। পথ অবরোধও করা হয়। গতকালই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে গাড়ির চালককে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের পরিকাঠামো থাকলেও কেন দুর্ঘটনা এড়ানো যাচ্ছে না? নজরদারিতে কি খামতি থেকে যাচ্ছে?

আলিয়ার পড়ুয়ার মৃত্যু কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ৩১ ডিসেম্বর ও এক জানুয়ারির রাতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন শয়ে শয়ে মানু্ষ। রাজ্যের প্রথম সারির হাসপাতাল এসএসকেএম-এ ওই ২৪ ঘণ্টায় ১৬৫ জনকে আনা হয়েছে যারা পথ দুর্ঘটনার শিকারহয়েছেন। এর মধ্যে ৪০ জনকে ভর্তি করতে হয়েছে। অতি সংকটজনক অবস্থা ছিল নয় জনের। ২৫ জনের অস্ত্রোপচার করতে হয়।

‘ভয়ে পুলিশ নাম প্রকাশ করছে না’

এই দুর্ঘটনার অধিকাংশের নেপথ্যে রয়েছে ট্রাফিক বিধি ভেঙে গাড়ি চালানোর চেষ্টা। পয়লা জানুয়ারি শুধু কলকাতায় বিধি লঙ্ঘনের দায়ে ২৫০ জনকে জরিমানা করেছে পুলিশ। মদ্যপ অবস্থায় বা বিনা হেলমেটে গাড়ি-বাইক চালানোর জন্য অভিযোগও দায়ের হয়েছে বড় সংখ্যা।

কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ট্র্যাফিক) সুনীল যাদব জানিয়েছেন, "গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাইপাস, মাঝেরহাট ব্রিজ, গড়িয়াহাট উড়ালপুল, রেড রোড, এজেসি বোস রোড-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা।”

উৎসবের মৌসমে বিধি যাতে ঠিকঠাক পালন করা হয়, সেজন্য প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু বিধিভঙ্গকারীরা উল্টে পুলিশকে গালিগালাজ করেছে বলে অভিযোগ। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাসে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে ধাক্কা মেরে চম্পট দেয় একটি গাড়ি। পাঁজরের হাড় ভেঙে গিয়েছে তার। অজয়নগর এলাকায় পুলিশ বিধি মানতে বলায় আক্রমণের শিকার হয়েছে।

কলকাতায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন মানুষ।
কলকাতায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন মানুষ। ছবি: Payel Samanta/DW

এ জন্য রাজ্যের শাসক দলের দিকে আঙুল তুলেছেন সাবেক পুলিশকর্তা নজরুল ইসলাম। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, "পুলিশ নির্ভয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করছে না বলে এই পরিস্থিতি। আলিয়ার পড়ুয়াকে যে গাড়ি ধাক্কা মেরেছে, তার মালিক শাসক দলের এক বিধায়ক। ভয়ে পুলিশ তার নাম প্রকাশ করছে না।”

শহরের বিভিন্ন রাস্তায় স্পিড মিটার বসানো রয়েছে। নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি গতিতে গাড়ি চালালে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চিহ্নিত হয়ে যায় বিধিভঙ্গকারী যানটি। তবু ঘটে চলেছে বিধিভঙ্গের ঘটনা। কিন্তু সচেতনতা ছাড়া শুধু নিয়মের বেড়াজালে কি দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব?

জনসচেতনতা বাড়াতে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করা হয় রাজ্য জুড়ে। বছরভর চলে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ' কর্মসূচি। স্কুলপড়ুয়ারা সামিল হয় প্রচারে। পরিবহণ বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, "সচেতনতার উপর নির্ভর করলে হবে না। বিধি পালনের ক্ষেত্রে পুলিশকে কড়া হতে হবে সারা বছর। তার সঙ্গে বাড়াতে হবে প্রযুক্তির ব্যবহার।

Indien Verkehrssicherheit in Kalkutta
ছবি: Payel Samanta/DW
ডয়চে ভেলের কলকাতা প্রতিনিধি পায়েল সামন্ত৷
পায়েল সামন্ত ডয়চে ভেলের কলকাতা প্রতিনিধি৷