1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেন্দ্রের চাকুরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি, রাজ্যে বাড়বে কবে

পায়েল সামন্ত
২১ অক্টোবর ২০২৩

আবারো বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকুরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ৷ এর ফলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের সঙ্গে পার্থক্য আরো বেড়ে গেল৷

https://p.dw.com/p/4XqwC
Indien I  Chinatown (Tiretti Bazaar) in Kolkata - BG: An Indo-Chinese love affair
ছবি: Mahima Kapoor/DW

উৎসবের মরশুমে এক কোটিরও বেশি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীর মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ বেড়েছে৷ গত বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিএ চার শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ এ বছরের পয়লা জুলাই থেকে বর্ধিত হার কার্যকর হবে৷

কেন্দ্রের মহার্ঘভাতা

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৪২ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পান৷ এটা বেড়ে হবে ৪৬ শতাংশ৷ এতে লাভবান হবেন ৪৮ লক্ষ ৬৭ হাজার কর্মী, ৬৭ লক্ষ ৯৫ হাজার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী৷ এরজন্য কেন্দ্রের কোষাগার থেকে প্রতি বছর খরচ হবে ১২ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা৷

তবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের কর্মীদের মহার্ঘভাতা যে বাড়বে না, তা রাজ্য সরকার আগেই ঘোষণা করেছে৷ ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রাজ্য সরকারের কর্মীরা ছয় শতাংশ ডিএ পেয়েছেন৷ সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ-র বেড়ে হয়েছে ৪৬ শতাংশ৷

পশ্চিমবঙ্গে ২০২০ সালে ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর হওয়ার পরে তিন শতাংশ ডিএ বেড়েছিল৷ চলতি বছর বাজেটের সময়ে আরও তিন শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

রাজ্যের সঙ্গে পার্থক্য

তবে এই সময়ের মধ্যে দফায় দফায় ডিএ বাড়িয়েছে কেন্দ্র৷ ২০২২ সালের পয়লা এপ্রিল ও  পয়লা জুলাইয়ে তিন ও চার শতাংশ, গত পয়লা জানুয়ারি থেকে চার শতাংশ বেড়েছে৷ এবার কেন্দ্রের বৃদ্ধিতে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে পার্থক্য হল ৪০ শতাংশ৷

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে এক লাফে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন অনেকটাই বেড়ে যাবে৷ এ রাজ্যের সরকারি কর্মীদের প্রাপ্তির থেকে যা অনেক বেশি৷ অন্যান্য রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য ডিএ-র হার পশ্চিমবঙ্গের মতো এতটা কম নয়৷

প্রতিবেশী একাধিক রাজ্যে মহার্ঘভাতার হার পশ্চিমবঙ্গের থেকে অনেকটাই বেশি৷ রাজ্য সরকারি কর্মীরা বিহার ও অসমে ৩৪ শতাংশ, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডে ৩৮ শতাংশ, ত্রিপুরায় ২০ শতাংশ হারে ডিএ পান৷

টানাপোড়েনের ডিএ

কলকাতা হাইকোর্ট ২০০৬ সাল থেকে নির্দিষ্ট হারে ডিএ দিতে বলেছিল রাজ্যকে৷ এনিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে৷ নবান্ন জানিয়েছে, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বকেয়া ডিএ মেটানোর আর্থিক সামর্থ্য রাজ্য সরকারের নেই৷ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, রাজ্য কোষাগারের যা হাল তাতে কেন্দ্রের সমান হারে মহার্ঘ ভাতা দেয়া সম্ভব নয়৷

আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে: ভাস্কর ঘোষ

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মোট ঋণের বোঝা ২০১৯-এর মার্চে চার লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৩-এর মার্চের শেষে ছয় লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে৷ তবে শুধু এই রাজ্য নয়, কোভিড পরিস্থিতিতে অনেক রাজ্যেরই ঋণের বোঝা বেড়েছে৷

এই পরিস্থিতিতে দিনের পর দিন প্রতিবাদ করে চলেছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা৷ বিভিন্ন সংগঠন একইসঙ্গে আইনি লড়াই চালাচ্ছে৷ হচ্ছে মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি৷ গত ১০ ও ১১ অক্টোবর রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি পালন করেন কর্মী ও শিক্ষকরা৷

ভবিষ্যতের পথ

বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বকে নিয়ে গঠিত যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের আহবায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে৷ সেই কারণেই রাজ্যের কর্মীদের সরকার ডিএ দিতে পারছে না৷ পদমর্যাদা অনুযায়ী একজন কর্মীর প্রতি মাসে এর ফলে ক্ষতি হচ্ছে ১২ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা৷''

অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিৎ বসু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দেশের সব বড় রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে কম হারে ডিএ পান রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা৷ এটা কেন হবে? মহার্ঘভাতা বাবদ কেন্দ্র কোনো টাকা রাজ্যকে দেয় না৷ অৰ্থ কমিশনের সুপারিশে যে টাকা কেন্দ্র দেয়, তা রাজ্য খরচ করে৷ তা হলে কেন রাজ্যের কর্মীরা প্রাপ্য টাকা পাবেন না?’’

আন্দোলনকারী কর্মী ও শিক্ষকরাবলে থাকেন, তারা সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন৷ যদিও প্রসেনজিতের মতে, মহার্ঘভাতা সাংবিধানিক অধিকার নয়৷

ভবিষ্যতে বাড়তি ডিএ মিলবে, এমন ইঙ্গিত রাজ্য সরকার দেয়নি৷ ভাস্কর বলেন, ‘‘উৎসবের মরশুম শেষ হলেই আমরা আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়াব৷ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য