1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২৫ বছর পরের জার্মানি

ভল্ফগাং ডিক/ রায়হানা বেগম২২ মার্চ ২০১৩

কল্পনা করুন তো ২০৩৭ সালে আমাদের এই পৃথিবীটা দেখতে কেমন হবে? এই গ্রহের বাসিন্দারা কীভাবে জীবন যাপন করবেন? সাইন্স ফিকশনে ফ্যান্টাসি তো সীমা ছাড়িয়ে যায়৷ তবে এ নিয়ে বাস্তবসম্মত গবেষণাও রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/17z1y
La Defense ist ein modernes Hochhausviertel westlich von Paris und gilt als Europas größte Bürostadt. La Defense District, Paris, France
ছবি: picture alliance/Bildagentur-online

২০৩৭ সালে এসেও প্লেন বা হেলিকপ্টারে করে কাজে যেতে পারবে না মানুষ৷ কিংবা চাঁদে ও মঙ্গল গ্রহে চাষাবাদও করতে পারবে না, অন্তত এটা বলা যায় ৷ গত ২০ বছর ধরে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর চালচিত্রটা কেমন হবে, তা নিয়ে গবেষণা করছে হামবুর্গের ‘ট্রেন্ড ব্যুরো' , সংগ্রহ করছে তথ্য-উপাত্ত৷ সংস্থাটির পরিচালক বির্গিট গেবহার্ট৷ তাঁর সঙ্গে আছেন সমাজতত্ত্ববিদ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের ভবিষ্যদ্বাণী র অনেক কিছু ফলেও গেছে ইতিমধ্যে৷ ২৫ বছর পর জার্মানির চেহারাটা দেখতে কেমন হবে, এটাই এখন গবেষণার বিষয় বির্গিট গেবহার্ট ও তাঁর সহকর্মীদের৷

Symbolbild zu "Jobsuche Social Media" Copyright: Fotolia/Photo-K #43926730
ধারণা করা হচ্ছে, তথ্য প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকটি তুলে আনতে চেষ্টা করবে জার্মানরাছবি: Fotolia/Photo-K

ধারণা করা হচ্ছে, তথ্য প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকটি তুলে আনতে চেষ্টা করবে জার্মানরা৷ ব্লগ বা ফেসবুকে ঢুকে কেউ হ্যাকিং করতে পারে বা প্রযুক্তিকে অপব্যবহার করতে পারে, এই আতঙ্কটা আর থাকবে না৷ পেশা, পরিবার ও বিনোদন – এই তিন ক্ষেত্রের মধ্যে অনায়াসে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে মানুষ৷ তবে জার্মানিতে লোকজন আরও প্রতিযোগিতামুখী হবে৷ ধনী দরিদ্রের ফারাকটাও বাড়বে৷

পরিষেবা ক্ষেত্রে মানুষের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে৷ বাজার সদাই করতে সহায়তা পাওয়া যাবে৷ বাচ্চা, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের দেখাশোনা করতেও সাহায্য পাওয়া যাবে৷ এসবের জন্য খরচও খুব বেশি হবেনা৷ অনেক কিছু করে দেবে রোবোটরা৷ একেবারে জুতা সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত৷ এমনকি অসুখ হলে ঠিকমতো ওষুধও খাইয়ে দেবে যান্ত্রিক মানুষরা৷

আর একটা প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাবে মানুষের মধ্যে৷ কোনো কিছু কিনে মালিক হওয়ার চাইতে ভাগাভাগি বা বদলাবদলি করার দিকে ঝুঁকে পড়বে লোকে৷ যেমন একটি গাড়ি সারাদিন কাজে না লাগলে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা হবে৷ দিনে একজন রাতে আরেক জন৷ এই ভাবে দুই তরফেরই আর্থিক সাশ্রয় হবে৷ বার্লিনে তো এখনই একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে: কয়েকজন মিলে একটি বাগান লিজ নেন, কাজকর্ম করেন ভাগাভাগি করে, ফলমূল-তরিতরকারিটাও ভাগ করে নেন৷

শহরগুলি অবশ্য মানুষের ভিড়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে না৷ তবে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রিক গাড়ি শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় চলাফেরা সহজ করবে৷

Projekt für einen Garten in der Luft, vertical farm. Quelle: verticalfarm.com
বড়বড় দালানে নিজস্ব বিদ্যুতশক্তি উত্পাদনের ব্যবস্থা থাকবেছবি: verticalfarm.com

বড়বড় দালানে নিজস্ব বিদ্যুতশক্তি উত্পাদনের ব্যবস্থা থাকবে৷ ছাদে তৈরি করা হবে বাগান৷ ফলে আবহাওয়ার ওপর পড়বে ইতিবাচক প্রভাব৷

শহরের ধনী বাসিন্দারা দেয়ালঘেরা বাড়িতে বসবাস করবেন৷ গেটে থাকবে দারোয়ান৷ এতে করে বেকার, অভিবাসী বা দরিদ্রদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখা যাবে৷ যাদের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকবে জার্মানিতে৷

অন্যদিকে বিভিন্ন প্রজন্ম কাছাকাছি বসবাস করতে পছন্দ করবে৷ প্রযুক্তির দৌড় অনেকটা বেড়ে যাবে৷ ডিজিটাল ভিজিটিং কার্ডের মাধ্যমে অন্যকে চেনাজানা সহজ হবে৷ কার্ডে শুধু ব্যক্তির নাম ঠিকানা নয়, আত্মীয়স্বজন, পছন্দ -অপছন্দ, হবি ইত্যাদি সব কিছুর উল্লেখ থাকবে৷ স্ক্যানারের মাধ্যমে জানা যাবে কোন পণ্য কোথায় সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে৷ অর্থাৎ আশপাশের এলাকাটাই দোকানপাটের মত হবে৷ চাহিদা অনুযায়ী জিনিসপত্র তৈরি করা হবে৷ প্রত্যেকের রুচি অনুযায়ী পোশাক আশাক বা ভোজ্যপণ্য প্রস্তুত করা হবে৷ অর্থাৎ কর্তার ইচ্ছায় হবে কর্ম৷

পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো জায়গায় কাজ খোঁজা আরও সহজ হবে৷ খেয়েপরে বেঁচে থাকতে অ্যামেরিকায় যেমন একাধিক কাজ করতে হয় অনেককে, জার্মানিতেও এই রকম একটা প্রবণতা দেখা যাবে৷ এক কাজ থেকে আরেক কাজে ছুটবে লোকে৷ ট্রেনিং, প্রশিক্ষণ চলতেই থাকবে৷ অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত কাজ করবে মানুষ৷ অভিজ্ঞতার ওপর জোর দেয়া হবে৷ বেতন বাড়ানোর চেয়ে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে কর্মীদের৷ যেমন কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু ন্যাপ বা বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে অফিসে৷ থাকবে হালকা ব্যায়ামের ব্যবস্থা৷ পাওনা ছুটি ছাড়াও অতিরিক্ত ছুটি মঞ্জুর করা হবে প্রবীণ কর্মীদের জন্য৷ ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের মধ্যে সীমারেখাটা একাকার হয়ে যাবে৷

HAMBURG, GERMANY - DECEMBER 28: Participants work at their laptops at the annual Chaos Computer Club (CCC) computer hackers' congress, called 29C3, on December 28, 2012 in Hamburg, Germany. The 29th Chaos Communication Congress (29C3) attracts hundreds of participants worldwide annually to engage in workshops and lectures discussing the role of technology in society and its future. (Photo by Patrick Lux/Getty Images)
কোনো কিছু কিনে মালিক হওয়ার চাইতে ভাগাভাগি বা বদলাবদলি করার দিকে ঝুঁকে পড়বে লোকেছবি: Getty Images

‘এমন একটা পৃথিবীতে আমি বাস করতে চাইনা৷' বির্গিট গেবহার্ট ভবিষ্যতের এই চিত্রটা যেখানেই তুলে ধরেছেন সেখানেই এমন একটা উত্তর পাওয়া গেছে৷ যে সমাজে মানুষ এত আত্মকেন্দ্রিক, নিঃসঙ্গ ও হৃদয়হীন, সেখানে স্বস্তি বোধ করা যাবে না, এটাই অনেকের ধারণা৷ বির্গিট গেবহার্ট অবশ্য মনে করেন, ভবিষ্যতের জার্মানি অতটা ধূসর নয়, অনেক ইতিবাচক দিকও রয়েছে সেখানে৷ নতুন নতুন সুযোগ সুবিধাগুলিকে একটু হাতড়ে দেখলে ভয়ও দূর হবে মানুষের মন থেকে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য