কোপেনহেগেনে হর্নেমানদের বাড়ি
৩০ মার্চ ২০১৭লেনে হাল্সে হর্নেমান বললেন, ‘‘কোপেনহেগেনে আমাদের বাড়িতে স্বাগতম৷ আপনাদের দেখাব, আমরা কীভাবে থাকি....ভেতরে আসুন৷ এই কুকুররা, তোরাও ভেতরে আয়!’’
দু'টি রঙের প্রাধান্য: পাঁশুটে আর কালো, আর এই দু'য়ের মাঝামাঝি নানা রং৷ গৃহকর্ত্রী এ সব দিয়ে তাঁর নিজের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ কেননা রং পছন্দ করাটা লেনে হাল্সে হর্নেমানের কাছে একটা আবেগপূর্ণ প্রক্রিয়া৷
লেনে বললেন, ‘‘রং খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ রং যেন কোথাও বেড়াতে নিয়ে যায়, কত ধরনের জায়গার কথা মনে করিয়ে দেয়, যেন গল্পের মতো, কত জায়গায় যাবার, কত কী করার জিনিস৷ যে কারণে এ বাড়িতে শুধু ঘরের ছাদগুলো ছাড়া সাদা বলে কিছু নেই৷’’
কাজেই এত কালো আর পাঁশুটে রং সত্ত্বেও পরিবেশটা বেশ উষ্ণ৷ এক্ষেত্রে আলোর একটা বিশেষ ভূমিকা আছে৷ নতুন করে লাগানো বড় বড় জানলা দিয়ে বাইরের আলো এসে পড়ে৷
আলো ও উষ্ণতা
বসবার ঘরের কেন্দ্রেই রয়েছে ফায়ারপ্লেস, যেমন রয়েছে নানা ধরনের বাতি – ডিজাইনার ল্যাম্প থেকে শুরু করে ফ্লিমার্কেটে যেসব পুরনো বাতি পাওয়া যায়৷ সন্ধ্যেয় বা শীতের দিনে এই সব বাতি আলো ও উষ্ণতা ছড়ায়৷
লেনে শোনালেন, ‘‘আমি চাইলাম এমন একটা জায়গা তৈরি করতে, যেখানে থাকতে ভালো লাগে৷ আমাদের তো শুধু এই মুহূর্তটুকুই আছে, সেই মুহূর্তটিতে আমরা যে জায়গায় কাটাতে চাই – আমি তেমন একটা জায়গা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম৷ শুধু আমার জন্য নয়, কেননা, আমি এখানে একা থাকি না৷ তাই জায়গাটা পরিবারের সকলের জন্যই চেয়েছিলাম৷’’
লেনে হাল্সে হর্নেমান তাঁর স্বামী হান্স, ওঁদের ছেলেমেয়ে ও তিনটি কুকুরকে নিয়ে এখানে বাস করেন৷ গোটা পরিবার যেখানে একত্রিত হয়, সেই জায়গাটি হলো কিচেন বা রান্নাঘর৷
কিচেন শুধু রান্নাঘর নয়
অন্যদের জন্য কিচেন ডিজাইন করে দেওয়া হলো লেনে-র পেশা৷ নিজের কিচেনটিকে কিন্তু তিনি শুধু রান্নাঘর হিসেবে ডিজাইন করেননি, বরং কিছুটা শিল্পকলা হিসেবেও করেছেন৷
লেনে জানালেন, ‘‘এটা একটা কিচেন বটে, কিন্তু শুধু কিচেন নয়৷ এই গ্র্যানাইট শিলা পাথরের পাতটা ব্রাশ করা, পালিশ করা নয় – ফলে এটা দেখতে অনেক নরম৷ তলার ক্যাবিনেটটা আবার কাঠের তৈরি, একটির পর একটি ড্রয়ার৷ ড্রয়ার টিপে দিলে তা নিজে থেকেই বেরিয়ে আসে – ইলেকট্রনিক লাগানো বলে৷ কাজেরও বটে, আবার দেখতেও ভালো৷’’
তিনতলা বাড়িটা আগে ছিল একটা ক্লিনিক৷ এখন তা থেকে মোট ৪০০ বর্গমিটার এলাকার একটি বসতবাড়ি তৈরি হয়েছে৷ হর্নেমান পরিবারের কাছে বাড়িতে প্রচুর জায়গা থাকাটা জরুরি৷
‘মাই হোম ইজ মাই ক্যাসল’
হান্স হর্নেমান বললেন, ‘‘নিজের বাড়ি, মানে নিজের দুর্গ৷ চারপাশে এমন সব জিনিস থাকা চাই, যা আমি উপভোগ করি, যা আমার ভালো লাগে৷ ড্যানিশ ভাষায় ‘হুইগ্গে' কথাটার মানে হলো নিরিবিলি, পরিচ্ছন্ন, আরামপ্রদ৷ এটা ড্যানিশ সংস্কৃতির একটা বড় অংশ৷’’
লেনে শোনালেন, ‘‘আমরা এখনও অনেক বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনকে বাড়িতে নিয়ে আসি৷ কাজেই আমাদের বাড়িতে লোক আসে, ফলে আমরা কীভাবে থাকি, তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হয়, সুন্দর সুন্দর জিনিস রাখতে হয়৷ শুধু সুন্দরই নয়, মান ভালো হওয়া চাই৷ তাতে আরো বেশি মজা৷’’
লেনে হাল্সে হর্নেমান এর আগেও বাড়ি কিনে সারিয়েছেন – অংশত নিজেদের থাকার জন্য৷ কাজেই আগামীতে যে তিনি আবার কখন কোন ‘কুৎসিত হাঁসের ছানা’ খুঁজে পেয়ে তাকে সুন্দরী রাজহংসীতে পরিণত করেন, কে জানে৷
গ্যোনা কেটেল্স/এসি