কোলন কার্নিভালের ৯১ বছর বয়সি ড্যান্সার
৫ মে ২০২৩ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘ড্যান্স আমার কাছে আত্মার ভাষা৷ যখন একা থাকি তখনও ড্যান্স আমার সঙ্গে থাকে৷ অনেক ছোট বয়স থেকে এটা আমি করছি৷''
কোলন কার্নিভালেরঅবিচ্ছেদ্য অংশ ড্যান্স, আর ‘ফুঙ্কেনমারিশেন'৷ আর ফুঙ্কেনমারিশেন মানেই অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী৷ এক্ষেত্রে বিগি ফানেনশ্রাইবারের অবদান সবচেয়ে বেশি৷ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন৷
১৯৭০ এর দশকে তিনি ফুঙ্কেনমারিশেনের বিখ্যাত ‘উপরে তুলে ধরা ও ছুঁড়ে মারার' বিষয়টি চালু করেন৷ এরপর থেকে তাকে মারিশেনের জননী হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷
ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘সমারসল্ট থ্রো, একার্টে থ্রো - ড্যান্সের প্রতি আমার উৎসাহ আমি কোলন কার্নিভালে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি৷''
তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের নিজে করে দেখান, কীভাবে ঠিকমতো নাচতে হবে৷ যেমন এখানে লুফটমারিন ড্যান্স গ্রুপকে দেখাচ্ছেন৷
ধ্রুপদি ব্যালে ড্যান্স থেকে বিগি তার কোরিওগ্রাফির অনুপ্রেরণা পান৷ ১৯৪০ এর দশকের শেষদিকে তিনি কোলন অপেরায় ড্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন৷ ১৯৫৭ সালে দক্ষিণ জার্মানির ফ্রাইবুর্গের প্রিমা ব্যালেরিনায়ও কাজ করেন বিগি৷ ১৯৬০ এর দশকের শেষদিকে ইউরোপ ও অ্যামরিকা চষে বেড়িয়েছেন৷ তবে শুরু থেকেই কার্নিভালের প্রতি তার ভালোবাসাটা ছিল৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোলন শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল৷ ঐ অবস্থায় বিগি ১৯৪৭ সালে বিধ্বস্ত কোলন অপেরার কাছে প্রতিদিন বিকালে গৃহিনীদের নিয়ে নাচের আয়োজন করেছেন৷ এখন ঐ জায়গায় একটি হোটেল হয়েছে৷
ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘আমাদের মতো কোলনের মানুষের কাছে ওটা সবচেয়ে সুন্দর জিনিস ছিল৷ কারণ ভয়াবহ সেই যুদ্ধের পর অবশেষে আমরা কার্নিভাল উদযাপন করতে পেরেছিলাম৷ আবার আনন্দ করতে পেরেছিলাম৷ গান গাইতে পেরেছিলাম, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছিলাম৷ আমার মতো কোলনের মেয়ের কাছে কার্নিভাল হচ্ছে জীবনের পরশমণি৷''
পেশাদার নৃত্যশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ করার পর বিগি ফানেনশ্রাইবার পুরোপুরি কার্নিভালের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন৷ কার্নিভালের সব ইভেন্ট এখনও পুরুষরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে৷
ফানেনশ্রাইবার জানান, ‘‘১৯৭০ ও ৬০ এর দশকে কোলন কার্নিভালে একজন নারী কোনো বড় ভূমিকা রাখতে পারতেন না৷ কিন্তু সেইসময় পুরুষেরা আবিষ্কার করেছিল- নিজের প্রশংসা নিজে করতে চাই না- আমার গ্রুপ ভালো পারফর্মেন্স করছিল৷''
শৃঙ্খলা ও শক্ত ইচ্ছা এখনও বিগির চরিত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য৷ এখনো প্রায় প্রতিদিন সুযোগ পেলে তিনি অনুশীলন করেন৷
আরেকবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, তার বয়স কিন্তু ৯১!
বিগি ফানেনশ্রাইবার প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, বেশি বয়সেও জীবন পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করা সম্ভব৷
ক্রিস্টিয়ান ভাইলেসান/জেডএইচ