ক্যানাডার সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত: ট্রুডো
১৭ অক্টোবর ২০২৪ভারত-ক্যানাডা সম্পর্ক আরো খারাপ হলো। এবার ক্যানাডার পার্লামেন্টারি কমিটির সামনে ভারত-ক্যানাডা সম্পর্ক নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। জানালেন, চাইলে ভারতে জি২০ বৈঠকের সময়েই এনিয়ে হইচই করতে পারতেন তিনি। কিন্তু ক্যানাডা তা চায়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এবিষয়ে আলাদা করে কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে ভারত তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই বাধ্য হয়েই ক্যানাডার সরকার এবং পুলিশকে বিষয়টি সকলের সামনে তুলে ধরতে হয়ছে।
ট্রুডো বলেছেন, ''ক্যানাডার শিখ নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর খুনে ভারতীয় এজেন্টদের ভূমিকার স্পষ্ট প্রমাণ আছে আমাদের হাতে। ওই ঘটনায় ভারতীয় কূটনীতিকদের একাংশ যে জড়িত, তার প্রমাণও আমাদের হাতে আছে।'' শুধু তা-ই নয়, ভারতীয় কূটনীতিকেরা ওই ধরনের আরো ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। তারা লাগাতার একই রকমভাবে ক্যানাডায় বসবাসকারী একশ্রেণির শিখ জনগোষ্ঠীর উপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
ট্রুডো বলেছেন, ভারত ক্যানাডার সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে। যা ক্যানাডার পক্ষে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। ভারতের সঙ্গে কোনোরকম লড়াই বা দ্বন্দ্বে যেতে চায় না ক্যানাডা। কিন্তু ভারত সীমা অতিক্রম করে ফেলেছিল। ক্যানাডার সার্বভৌমত্ব এবং দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া ক্যানাডার প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য।
এদিকে ক্যানাডার পুলিশ স্পষ্টভাবে অভিযোগ করেছে, ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার একাজ করেছে। তাদের বারংবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তারা ক্যানাডার ভিতরে শিখদের উপর আক্রমণ চালিয়ে গেছে।
পুলিশের বক্তব্য, তদন্তে স্পষ্ট, ক্যানাডায় বসবাসকারী ভারতের সর্বোচ্চ কূটনীতিক এবং আরো পাঁচ কর্মকর্তা সরাসরি ওই হত্যার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। সে কারণেই তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারত অবশ্য দাবি করেছে, ওই কূটনীতিকদের ভারতই ফিরে আসার কথা বলেছে, তাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে।
অন্যদিকে ভারতের দাবি, নিজেদের কূটনীতিক ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেই তারা ক্যানাডার ছয় কূটনীতিককে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য সময়সীমা দিয়েছে।
ট্রুডোর দাবি
ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, চাইলে এই তদন্তের কথা অনেক আগেই সকলের সামনে প্রকাশ করা যেত। কারণ তথ্য প্রমাণ অনেক আগেই ক্যানাডার হাতে এসেছে। কিন্তু তারা তা চাননি। ভারতের সঙ্গে এবিষয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলাদা করে এবিষয়ে কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ভারতের তরফে সেই অর্থে কোনো সদর্থক ভূমিকা দেখানো হয়নি।
ট্রুডোর অভিযোগ, ভারত কার্যত এবিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে অস্বীকার করেছে। সে কারণেই বিষয়টি সকলের সামনে আনতে বাধ্য হয়েছে ক্যানাডা।
ভারতের দাবি
ট্রুডোর এই বক্তব্যের পর তার জবাব দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের দাবি, ক্যানাডা ভারতকে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেয়নি। ভারত এবং তার কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে যে চরম অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার কোনোরকম প্রমাণ ভারতের হাতে নেই। ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী যেভাবে কথা বলছেন, তা ভারত-ক্যানাডার সম্পর্ক নষ্ট করছে। এবং এর জন্য দায়ী সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, পিটিআই)