উদ্বিগ্ন ইউরোপের পুঁজিবাজার
২৬ মার্চ ২০১৪ক্রাইমিয়া সংকটের জের ধরে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের বেড়ে চলা উত্তেজনা পুঁজিবাজারকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে৷ একদিকে ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সৈন্যদের তৎপরতার ফলে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ অন্যদিকে রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপালে ইউরোপের অনেক সংস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কর্মসংস্থানের উপর তার প্রভাব পড়তে পারে৷ ইউরো এলাকার অর্থনীতি সম্পর্কে গত সপ্তাহে ইতিবাচক খবর সত্ত্বেও সোমবার ইউরোপের বাজারে দরপতন ঘটেছে৷ চীনে উৎপাদন কমে চলায়ও বাজারে হতাশা দেখা যাচ্ছে৷ মার্কিন অর্থনীতি সম্পর্কেও কোনো সুখবর পাওয়া যাচ্ছে না৷
এমন অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও অবশ্য ইউরোপীয় স্তরে বেশ অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ ইউরো এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে৷ এমনকি সামান্য হলেও বেকারত্বের হার কমছে৷ এক সমীক্ষা অনুযায়ী চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে প্রবৃদ্ধির গড় হার ০.৫ শতাংশ হতে চলেছে, যা গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি৷ এই ইতিবাচক প্রবণতায় নেতৃত্ব দিচ্ছে ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক শক্তি জার্মানি৷
এদিকে ব্যাংকিং ইউনিয়নের প্রশ্নে অবশেষে ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে৷ গত সপ্তাহে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ইইউ-র মধ্যে যে রফা হয়েছে, আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগেই তা অনুমোদিত হওয়ার কথা৷ ১৪ থেকে ১৭ই এপ্রিলের শেষ অধিবেশনে এই প্রস্তাব অনুমোদন হয়ে গেলে সদস্য দেশগুলিকেও আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করতে হবে৷ নভেম্বর মাসে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আওতায় ব্যাংক তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করবে৷ তারপর ২০১৬ সালে নতুন কাঠামো কার্যকর হবে, যার কাজ হবে করদাতাদের অর্থ ছাড়াই বিপর্যস্ত কোনো ব্যাংক গুটিয়ে নেওয়া৷
সংকটগ্রস্ত দেশগুলিও এই উন্নতির ক্ষেত্রে তাদের অবদান রাখতে পারছে৷ গ্রিসের অর্থনীতির উন্নতির লক্ষণ দেখতে পাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুয়রস রেটিং এজেন্সি৷ বিপুল ঋণভার সত্ত্বেও আগামী ৩ বছরে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে তারা মনে করে৷ আগামী কিস্তির আন্তর্জাতিক সহায়তা সম্পর্কেও বোঝাপড়া হয়েছে৷ বেশি মুনাফার আশায় গ্রিস ও পর্তুগালে বিনিয়োগও বাড়তে শুরু করেছে৷ ইটালিও সংস্কারের পথে এগিয়ে চলেছে৷ প্রধানমন্ত্রী মাটেও রেনসি-র কর্মসূচির প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থা অটুট রয়েছে৷ ফলে ইউরো এলাকার সার্বিক উন্নতির লক্ষণ স্পষ্ট৷
এসবি / জেডএইচ (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)